বাংলাদেশে সরকারি বীমা কয়টি কি কি - বাংলাদেশের সেরা বীমা কোম্পানি গুলোর নাম
বর্তমানে বাংলাদেশে অনেকগুলো বীমা কোম্পানি রয়েছে। তবে সবগুলো বীমা কোম্পানিই যে ভালো এমন কিন্তু নয়। এর মধ্যে কিছু কোম্পানি রয়েছে খারাপ আর কিছু কোম্পানি রয়েছে ভালো। তবে বাংলাদেশে যেগুলো সরকারি বীমা কোম্পানি রয়েছে সেগুলো বিশ্বস্ত। কিন্তু আমরা অনেকেই বাংলাদেশে সরকারি বীমা কয়টি আছে সেটা জানিনা। আবার অনেকেই বাংলাদেশের সেরা বীমা কোম্পানিগুলো সম্পর্কে জানতে চাই।
বীমা কি
বীমা কি? বীমা হলো একটি লিখিত চুক্তি ও আর্থিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যেখানে একজন বীমাগ্রহীতা নির্দিষ্ট কিছু প্রিমিয়ামের বিনিময়ে তার অর্থাৎ বীমা গ্রহীতার ঝুঁকি বা বিপদের ভার বীমা কারী ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের উপর অর্পণ করে। একটি উদাহরণ দিয়ে আপনাদেরকে বুঝিয়ে দিচ্ছি। ধরুন, সাকিব নামে একজন ব্যক্তি এবং ABC একটি ইন্সুরেন্স কোম্পানি। এদের মধ্য একটি লিখিত চুক্তি হলো। চুক্তিতে উল্লেখ করা হলো যে সাকিব প্রতি মাসে অথবা ছয় মাসে অথবা বছরে একবার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রিমিয়াম একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ABC ইন্সুরেন্স কোম্পানিকে দেবে।
এর বিপরীতে ABC ইন্সুরেন্স কোম্পানি সাকিবের চুক্তিতে উল্লেখিত ঝুঁকি বা বিপদের ভার গ্রহণ করবে চুক্তিতে উল্লিখিত নির্ধারিত সময়ের জন্য। অর্থাৎ সাকিব অথবা সে যে সম্পত্তির বীমা করবে তার যদি ওই সময়ের মধ্যে কোন ক্ষতি হয় তাহলে তার ক্ষতিপূরণ ABC ইন্সুরেন্স কোম্পানি দেবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই চুক্তিতে উল্লেখিত ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষতি হতে হবে। এক্ষেত্রে সাকিব হলো বীমা গ্রহীতা আর ABC ইন্সুরেন্স কোম্পানি হলো বীমাকারি। আশা করছি আপনাদেরকে বোঝাতে পেরেছি বীমা কি।
আরো পড়ুনঃ সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কি
এক্ষেত্রে আমরা জীবন বীমা করতে পারি, সম্পত্তি যেমন গাড়ির বীমা করতে পারি,
বাড়ির বীমা করতে পারি, স্বাস্থ্যের বীমা করতে পারি, সন্তানের শিক্ষার বীমা করতে
পারি ইত্যাদি। বীমার সংজ্ঞার উপর ভিত্তি করে বীমার কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
বৈশিষ্ট্য গুলো হলো-
- ঝুঁকির বিপক্ষে এক ধরনের আর্থিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হলো বীমা।
- বীমার বিষয়বস্তু হলো মানুষের জীবন ও সম্পত্তির ঝুঁকি।
- কিছু প্রিমিয়ারের বিনিময়ে বীমা কারী প্রতিষ্ঠান বীমা গ্রহীতার জীবন ও সম্পত্তির ঝুঁকি গ্রহণ করে।
- বীমা করার পর বীমা গ্রহিতার যদি কোন হানি বা ক্ষতি হয় তাহলে বীমা কারী প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রদান করতে বাধ্য থাকে।
সরকারি বীমা কয়টি কি কি
সরকারি বীমা কোম্পানি বলতে কি বুঝায়? সরকারি বীমা কোম্পানি বলতে বোঝায় কোন
দেশের সরকারের তত্ত্বাবধানে কোন বীমা কোম্পানির পরিচালনা করা হলে তাকে সরকারি
বীমা কোম্পানি বলা হয়। অর্থাৎ যে বীমা কোম্পানির মালিক সরকার তাকেই সরকারি বীমা
কোম্পানি বলা হয়। বাংলাদেশের সর্বমোট দুটি সরকারি বীমা কোম্পানি রয়েছে। সরকারি
বীমা দুটি হলো-
- সাধারণ বীমা কর্পোরেশন
- জীবন বীমা কর্পোরেশন
বাংলাদেশে এই দুটি সরকারি বীমা কোম্পানি ছাড়াও আরো অসংখ্য বেসরকারি বীমা
কোম্পানি রয়েছে। যেগুলো সরকারি বীমা কোম্পানির মতো গ্রাহকদেরকে বীমা সেবা দিয়ে
আসছে। আমরা এই পোস্টটিতে শুধু সরকারি বিমা দুটি নিয়ে আলোচনা করবো। আর বেসরকারি
বীমা গুলো নিয়ে অন্য কোন পোস্টে আবার অন্য একদিন আলোচনা করবো। এখন চলুন সরকারি
বিমা দুটি সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেই।
সাধারণ বীমা কর্পোরেশন
সাধারণ বীমা কর্পোরেশন বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্ববোধায়নে পরিচালনা করা হয়। এটি বাংলাদেশের সরকারি মালিকানাধীন একটি বাণিজ্যিক বীমা প্রতিষ্ঠান। যেটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। এই সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয় ঢাকা মতিঝিলে অবস্থিত। এই কর্পোরেশনের সারাদেশে প্রায় ৮ টি জোনাল অফিস এবং ৮৪ টির মতো শাখা অফিস রয়েছে। এটি সম্পূর্ণ একটি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি যা তার গ্রাহকদেরকে নন-লাইফ বীমা পলিসি প্রদান করে থাকে। নন-লাইফ বীমা পলিসির মধ্য রয়েছে বাণিজ্যিক বীমা, পুনঃবীমা, ব্যক্তিগত বীমা অগ্নি বীমা, শস্য বীমা, নৌ-বীমা, মোটরযান বীমা ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স শাখা সমূহ
বর্তমানে সাধারণ বীমা কর্পোরেশনটি বীমা কর্পোরেশন আইন, ২০১১ এর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। সাধারণ বোনা কর্পোরেশন একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের অনুমোদিত মূলধন রয়েছে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন রয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। বর্তমানে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন আইডিএলসি, ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেড, ন্যাশনাল হাউসিং ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো ইত্যাদি সব প্রতিষ্ঠানের স্পন্সর শেয়ার হোল্ডার ইত্যাদি।
জীবন বীমা কর্পোরেশন
জীবন বীমা কর্পোরেশন যাকে সংক্ষেপে JBC বলা হয়। বাংলাদেশের অন্যতম একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সরকারি বীমা কোম্পানি হল জীবন বীমা কর্পোরেশন। এটি ১৯৭৩ সালের ১৪ই মে মাসের প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এই কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন মোঃ আসাদুল ইসলাম। সালটি ছিল ১৯৭১ সে সময় পূর্ব পাকিস্তান বর্তমানে বাংলাদেশের ৭৫ টি বীমা কোম্পানী ছিল। এর মধ্যে ১০ টি বীমা কোম্পানি ছিল স্থানীয়ভাবে নিবন্ধিত। বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা লাভ করে অর্থাৎ ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ রাষ্ট্রপতির ৯৫ নং অধ্যাদেশ বলে বাংলাদেশে অবস্থিত সকল জীবন ও সাধারন বীমা কোম্পানিগুলোকে জাতীয়করণ করা হয়।
এসময় অনেকগুলো কোম্পানিকে বাদ দিয়ে মোট ৫ টি বীমা কোম্পানি গঠন করা হয়। তার মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় বীমা কর্পোরেশন, কর্ণফুলী বীমা কর্পোরেশন, রুপসা জীবন বীমা কর্পোরেশন, তিস্তা বীমা কর্পোরেশন এবং সুরমা জীবন বীমা কর্পোরেশন। এরপর রুপসা ও সুরমা জীবন বীমা কর্পোরেশনকে একত্রিত করে বাংলাদেশে জীবন বীমা কর্পোরেশন গঠন করা। যেখানে দুটি বেসরকারি বীমা কোম্পানি মালিকানাধীন এবং একটি সরকারি বীমা কোম্পানি মালিকানাধীন জড়িত।
বর্তমানে বাংলাদেশের জীবন বিভাগ কর্পোরেশন প্রায় ১৫ টির মতো স্কিমের মাধ্যমে
গ্রাহকদেরকে বীমা সেবা প্রদান করে আসছে। এই ১৫ টি জীবন বীমা স্কিম হলো-
- আমৃত্যু জীবন বীমা
- শিশুদের পলিসির মূল্য পরিশোধভিত্তিক বীমা
- পলিসির মূল্য পরিশোধ ভিত্তিতে বীমা
- শিশু প্রতিরক্ষা বীমা
- পেনশন স্কিম বীমা
- পলিসির অনুমিত মূল্য পরিশোধভিত্তিক বীমা
- মেয়াদি গোষ্ঠী বীমা
- এক দফায় প্রিমিয়াম বীমা
- পরিবর্তনশীল হিসাবে পলিসির মূল্য পরিশোধভিত্তিক গোষ্ঠী বীমা
- বন্ধক প্রতিরক্ষা বীমা
- বর্ধিষ্ণু হারে প্রিমিয়াম পরিশোধভিত্তিক বীমা
- পলিসির মূল পরিশোধভিত্তিক গোষ্ঠী বীমা
- যুগ্ম জীবন বীমা
- দলগত পেনশন বীমা এবং
- গ্রামীণ বীমা
জীবন বীমার সুবিধা
এতক্ষণ তো আমরা বাংলাদেশের কয়টি সরকারি বীমা কোম্পানি রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে
জানলাম। এখন চলুন এই জীবন বীমা করলে আমরা কি কি সুবিধা পাবো। সেই বিষয়গুলো জেনে
নেই। জীবন বীমা করলে যে সকল সুবিধা পাবো তা নিচে তুলে ধরা হলো-
- জীবন বীমার যে কোন মেয়াদের পলিসির ক্ষেত্রে আপনি যদি এক কিস্তি প্রিমিয়াম পরিশোধ করেন তাহলে মৃত্যুবরণ করলেও বীমা কোম্পানি আপনার সম্পূর্ণ বীমা অংক ফেরত দেবে।
- যদি মেয়াদ পূর্তি পর্যন্ত জীবন বীমা গ্রহিতা জীবিত থাকে তাহলে তার বীমা করা অর্থ ও সাথে লাভ ফেরত পাবে।
- একজন ব্যক্তি জীবন বীমার প্রিমিয়াম নিয়ম নিয়মিত জমা করে এক্ষেত্রে সে যদি মেয়াদ পূর্তির পূর্বে মারা যায় তাহলে তার বিমাকৃত সম্পূর্ণ অর্থ তার মনোনীত ব্যক্তিকে পরিশোধ করা হয়।
- লাভযুক্ত পলিসির ক্ষেত্রে বীমাকৃত অর্থের উপর অর্জিত বোনাস প্রদান করা হয়।
- বীমা গ্রহীতা যদি সহযোগী বীমা অর্থাৎ এডিবি অথবা পিডিএবি সুবিধা নেয় তাহলে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে বীমাকৃত অর্থের দ্বিগুণ টাকা পরিশোধ করা হয়।
- কোন বিমাকৃত ব্যক্তির যদি দুর্ঘটনার কারণে অঙ্গহানি ঘটে অথবা আঘাতপ্রাপ্ত অঙ্গ-স্থায়ীভাবে অকৃত হয়ে যায় তাহলে বীমাগ্রহিতা আনুপাতিক হারে বিমাকৃত অর্থ ফেরত পাবে।
- বীমা মেয়াদ এর মধ্যে যদি কোন দুর্ঘটনা অথবা অসুস্থতার কারণে বীমা গ্রহীতা স্থায়ীভাবে কর্মক্ষম হয়ে যায় তাহলে এককালীন অথবা নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত বীমা কারী প্রতিষ্ঠান ভাতা প্রদান করে।
- প্রত্যাশিত কিস্তি বীমার ক্ষেত্রে মেয়াদ চলাকালীন সময়ে যদি বীমা গ্রহীতা তার প্রাপ্য বীমা অর্থ উত্তোলন করে এবং এর পরে যদি তার মৃত্যু হয় তাহলে বীমা প্রতিষ্ঠান তার নমিনিকে বীমা করা সম্পূর্ণ অর্থ প্রদান করে।
- শিশু নিরাপত্তা বীমার ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তিতে অর্জিত বোনাসসহ মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়।
- পেনশন পলিসির ক্ষেত্রে যদি মেয়াদের মধ্য বীমা গ্রহীতার মৃত্যু হয় তাহলে তার মনোনীত ব্যক্তিকে বার্ষিক পেনশনের দশ গুন অর্থ প্রদান করা হয়।
- আর যদি পলিসির মেয়াদ পর্যন্ত বীমা গ্রহীতা বেঁচে থাকে তাহলে মেয়াদ শেষে যথাযথ আজীবনের পেনশন প্রদান করা হয় ইত্যাদি।
বাংলাদেশের সেরা বীমা কোম্পানি
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত এই দেশে অনেকগুলো বীমা কোম্পানি
চালু হয়েছে। সেগুলোর সবগুলোই যে ভালো এমন কিন্তু নয়। এর মধ্যে কিছু বীমা
কোম্পানি রয়েছে ভালো এবং সুনামধন্য আর কিছু কোম্পানি রয়েছে খারাপ আবার কিছু
কোম্পানি ইতিমধ্যে উধাও হয়ে গেছে। তাই যেকোন বীমা করার পূর্বে অবশ্যই আমাদের
কোম্পানিটি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। আর এর জন্য আজকের এই পোস্টটির এই
অংশটিতে আমরা বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা বীমা কোম্পানি কোনগুলো সেগুলো নিয়ে
আলোচনা করবো। বাংলাদেশে সেরা বীমা কোম্পানির তালিকায় রয়েছে এমন কিছু বীমা
কোম্পানি হলো-
১। সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। যদিও এর ভিত্তি ৩০ বছর আগে একটি প্রতিষ্ঠানের বোর্ডরুমে গঠন করা হয়েছিল। সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে সফলতা লাভ করে। বাংলাদেশের মধ্যেও এটিই প্রথম কোম্পানি যারা কিনা বীমার ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে থাকে। আর এর কারণেই মূলত এই কোম্পানিটি দ্রুত সফলতা লাভ করেছে। বর্তমানে এই কোম্পানির শাখা-প্রশাখা বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায় রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কাজ কি?
সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এর মূল লক্ষ্যই হলো গ্রাহকদের আর্থিক
নিরাপত্তা প্রদান করা এবং চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় আয়ের সমাধান
তৈরি করে দেওয়া। এছাড়া সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড তার
গ্রাহকদেরকে আরো বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে। বর্তমানে সোনালী
লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন নুর-ই
হাফসা এবং সিইও এর দায়িত্ব পালন করছেন মীর রাশেদ বীন আমান।
২। মেট লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড
পূর্বে আমেরিকান লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি (ALICO) নামে পরিচিত ছিল বর্তমানের মেট লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। বাংলাদেশের মধ্য যতগুলো বীমা কোম্পানি রয়েছে তার মধ্য সবচেয়ে প্রাচীন বীমা কোম্পানি। এটি ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। এই বীমা কোম্পানিটি প্রথম ১৯৫২ সালের আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসে এবং এসে সেই বছরে গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণ করে তাদের বিশ্বাসের জায়গাটি অর্জন করে। এরপর এক মিলিয়ন বাংলাদেশিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতেও সাহায্য করে এই বীমা কোম্পানিটি। এই কোম্পানিটিও সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির মতো ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে বীমা করে থাকে। মেট লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড সম্প্রতি সুপারব্র্যান্ডস বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। আর এই কোম্পানিটি বীমার ক্ষেত্রে খুবই বিশ্বস্ত।
৩। গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড
গার্ডিয়ান লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানিটি বাংলাদেশের বিশ্বস্ত সবচেয়ে বড় তিনটি বীমা কোম্পানি নিয়ে গঠিত। কোম্পানি ৩টি হলো-ব্রাক, এপেক্স এবং স্কয়ার কোম্পানি। গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড সর্বদা সরলীকৃত আবেদন পদ্ধতি, সময় এবং স্বচ্ছ নীতি সহ গ্রাহকদের মনের শান্তি প্রদানে লক্ষ্য রাখে। এই কোম্পানিটি সব সময় গ্রাহকদের বিমাযাত্রা জুড়ে ব্যক্তিগত সহায়তা এবং নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে গ্রাহকদের সাথে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে। আপনারা চাইলে এই কোম্পানিটিতে বীমা করতে পারেন।
৪। পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড
পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ২০০০ সালে বীমা আইনের অধীনে ঢাকার
মতিঝিলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথম দিকে এই কোম্পানিটি ভালো সার্ভিস দিচ্ছিল।
যদিও ২০১৫ সালের দিকে এই কোম্পানির বি*রুদ্ধে গ্রাহকের অনেক অভিযোগ উঠেছিল। তার
গ্রাহকদের টাকা ঠিকঠাক পরিশোধ করতে পারত না ইত্যাদি। কিন্তু ২০১৯ সালের পর থেকে
এই পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড সবকিছু গুছিয়ে নিয়েছে। এবং
গ্রাহকদেরকে সুষ্ট সেবা প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। যার ফলে বর্তমানে এই
কোম্পানিটি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
৫। ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড
ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ঢাকার গুলশানে অবস্থিত। এই ইন্সুরেন্স কোম্পানিটি খুবই বিশ্বস্ত একটি কোম্পানি। এই ইন্সুরেন্স কোম্পানিটি ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত লাভ করে। এটি একটি বেসরকারি ইন্সুরেন্স কোম্পানি। এই কোম্পানিটিকে মোট সুবিধা গ্রহণকারী গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৭ লক্ষ্যেরও বেশি। আর এই কোম্পানির এ পর্যন্ত মোট দাবি পরিশোধ করার টাকার পরিমাণ প্রায় ৫,৫৫০ কোটি টাকারও বেশি। বর্তমানে এই কোম্পানিটি সফলতার সাথে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এবং গ্রাহকদের সাথে তারা সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে। তাই আপনারা চাইলে নিশ্চিন্তে এই কোম্পানিতে বীমা করতে পারেন ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ অগ্রণী ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম
এছাড়া বাংলাদেশে আরো অনেক লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি রয়েছে। তবে সকল ইন্সুরেন্স
কোম্পানির মধ্যে এই কোম্পানিগুলোই বর্তমানে সবচেয়ে ভালো বলে বিবেচিত হয়েছে।
বাংলাদেশে কোন বীমা ভাল
আমাদের মাঝে অনেকেই জানতে চান যে বাংলাদেশের কোন বীমা ভালো। যদি ভালো বীমার কথাই
বলি বাংলাদেশে সবচেয়ে ভালো বীমা হলো জীবন বীমা। কারণ, জীবন বীমা করলে
আপনি অনেক ধরনের সুবিধা পাবেন। যে সুবিধাগুলো নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে এই পোস্টের
উপরের একটি অংশতে আলোচনা করেছি। এবং জীবন কর্পোরেশন সম্পর্কেও কিছু তথ্য তুলে
ধরে। এগুলো আপনি পড়লে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে বাংলাদেশে কোন
বীমা ভালো।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, এতক্ষণ আমরা আপনাদের সাথে বাংলাদেশে সরকারি বীমা কয়টি ও কি কি
এবং বাংলাদেশের সেরা বীমা কোম্পানিগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি
যদি এই পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে এতক্ষণে আপনি বীমা
সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পেরেছেন বলে আশা করছি। আসলে বীমা আমাদের সবার জীবনের
জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আপনি বীমা করার পূর্বে অবশ্যই যে কোম্পানিতে বীমা করবেন
এই কোম্পানি সম্পর্কে আগে ভালোভাবে খোঁজখবর নিবেন, তারপর বীমা করবেন। যদিও আমাদের
এই পোস্টটিতে উল্লেখিত বীমা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমানে শীর্ষ তালিকা
রয়েছে। তারপরও আপনি বীমা করার পূর্বে অবশ্যই খোঁজখবর নিবেন। ভালো থাকবেন, সুস্থ
থাকবেন। ধন্যবাদ।
Please comment according to Blogger Mamun website policy. Every comment is reviewed.
comment url