পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম - পাইলস এর ঔষধি গাছ
আপনি কি পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন? পাইলস থেকে মুক্তির জন্য কোন ঔষধ খুঁজে পাচ্ছেন না? তাহলে এই পোস্টটি থেকে জেনে নিন পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম ও পাইলস এর ঔষধি গাছ গুলোর নাম এবং ঔষধ ও গাছগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা। কেননা এই পোস্টটিতে আমরা পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম ও পাইলস এর ঔষধি গাছের নাম গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয় - পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম
পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম ও পাইলস এর ঔষধি গাছ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে আমরা পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয় এই সম্পর্কে জানবো। পাইলস একটি জটিল রোগ। এই রোগটি হলে নানান সমস্যা হতে পারে। তাই এই রোগটিকে হালকা ভাবে নেওয়ার কোন উপায় নেই। পাইলস হলে তাই আমাদের যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা করানো উচিত। পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয়-
- পাইলস হলে মলদ্বারের অংশটি ফুলে যায় এবং সেখানে অত্যাধিক ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হয়।
- পাইলস হলে মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
- পাইলস হলে অনেক সময় ব্যথা হীন রক্তক্ষরণ হতে পারে।
- চলাফেরা করতে সমস্যা হয় বিশেষ করে বসতে।
- পাইলস হলে মলদ্বারের অংশটুকু পরিষ্কার রাখা কষ্ট হয়ে যায়।
- পাইলস হলে প্রচন্ড জ্বালাপোড়া ও ব্যথা অনুভূত হয়।
- পাইলস হলে মলত্যাগ করতে অসুবিধা হয় ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ নোরিক্স ১ পিলের কার্যকারিতা কত সময়
এছাড়াও পাইলস হলে চলতি পথে আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই পাইলসকে
হালকাভাবে নেওয়ার কোন উপায় নেই। পাইলস হলে দ্রুত চিকিৎসা করানো উচিত। এখন চলুন
আমরা পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম গুলো জেনে নেই। সেই সাথে পাইলস এর ঔষধি
গাছগুলো সম্পর্কেও জানবো।
পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম
পাইলস এমন একটি রোগ যা একজন রোগীকে কাহিল করে ফেলতে পারে। পাইলস হলে সেই জায়গায়
প্রচন্ড ব্যথা ও জ্বালাপোড়া করে এবং জায়গাটি ফুলে যায়। যার ফলে রোগীর
স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে না। আপনারা অনেকেই পাইলস এর এলোপ্যাথিক
ঔষধের নাম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাই এই পোস্টটিতে আমরা আপনাদেরকে
পাইলসের এলোপ্যাথিক ঔষুধের নাম ও ঔষধগুলো সম্পর্কে একটু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা
করবো। চলুন তাহলে পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষুধের নাম গুলো জেনে নেই।
- Daflon 1000 mg
- Normanal 500mg
- Osmolax
- Lignocaine gel
- Erian
- পাইলোস্প্রে ইত্যাদি
Daflon 1000 mg
Daflon 1000 mg সাধারণত পাইলস রোগীদেরকে দেওয়া হয়। যারা দীর্ঘদিন ধরে পাইলস রোগে ভুগছেন তাদেরকে চিকিৎসকেরা Daflon 1000 mg এই ঔষধটি সেবন করতে বলেন। এই ঔষধটি বাংলাদেশের দুই রকমের পাওয়া যায় Daflon 500 mg ও Daflon 1000 mg। এখন এটি কিভাবে ব্যবহার করবেন, কারা ব্যবহার করবেন তা নিচে দেওয়া হলো।
আরো পড়ুনঃ নোরিক্স পিল খাওয়ার নিয়ম
Daflon 1000 mg ঔষধটি খাওয়ার নিয়মঃ যাদের পায়খানা রাস্তায় অনেক দিন ধরে পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন। ও পাইলসের কারণে শিরা ফুলে যায় ও সেখানে প্রচন্ড ব্যথা ও প্রদাহ হয় তাদের জন্য মূলত এই ঔষধটি। এক্ষেত্রে কিভাবে খাবেন? প্রথমদিকে এই ওষুধটি ১টি করে প্রতিদিন তিনবার খেতে হবে। তারপর ১০ দিন পরে ১ টি করে প্রতিদিন দুইবার এবং শেষের ১০ দিন ১ টি করে প্রতিদিন একবার খেতে হবে। এই নিয়মটি শুধু Daflon 1000 mg ঔষধটির জন্য।
Normanal 500mg
পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধ গুলোর মধ্যে এই ওষুধটি খুবই কার্যকারী একটি ঔষধ। এই
ঔষধটি মূলত যাদের হঠাৎ করে পাইলসের সমস্যা দেখা দেয় আর যাদের দীর্ঘদিনের পাইলসের
সমস্যা আছে তাদের জন্য। এছাড়াও যাদের দীর্ঘস্থায়ী শিরার সমস্যা রয়েছে তাদের
ক্ষেত্রে এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়।
Normanal 500mg ঔষধটি খাওয়ার নিয়মঃ পাইলস হওয়ার পর প্রথম ৪ দিন এই ঔষধটি ৩ টি করে দিনে তিনবার অর্থাৎ সকালে তিনটা, দুপুরে তিনটা, রাতে তিনটা খেতে হবে। এবং এর পরের ৩ দিন এই ওষুধটি ২ টি করে দিনে দুইবার অর্থাৎ সকালে দুইটা, রাতে দুইটা খেতে হবে। এবং পরের ২৩ দিন এই ঔষধটি ১ টি করে দিনে দুইবার অর্থাৎ সকালে একটা এবং রাতে একটা খেতে হবে। এভাবে মোট এক মাস এই ওষুধটি খেতে হবে। আর যাদের দীর্ঘদিনব্যাপী পাইলস রোগটি রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে এই ঔষধটি খাওয়ার নিয়ম হলো। ১টি করে ঔষধ দৈনিক দুইবার ২ থেকে ৩ মাস খেতে হবে।
Osmolax
Osmolax এই ঔষধটি মূলত একটি সিরাপ জাতীয় ঔষধ। এই ওষুধটিও পাইলস রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে এটি খাওয়ার নিয়ম হলোঃ প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে তিন চামচ খেয়ে ঘুমাতে হবে। তাহলে খুব তাড়াতাড়ি পাইলসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
Lignocaine gel
Lignocaine gel এই ঔষধটি মূলত ব্যবহার করা হয় যে সকল পাইলস রোগীদের মলত্যাগ করার সময় মলদ্বারে অনেক জ্বালাপোড়া করে তাদের জন্য। এক্ষেত্রে এই ওষুধটি মলদ্বারের জ্বালাপোড়া কমিয়ে দেয়। এটি খাওয়ার নিয়ম হলোঃ পায়খানা করার 10 থেকে 15 মিনিট আগে খেতে হবে ১ টি করে।
Erian
Erian এই ওষুধটি মূলত একটি মলম জাতীয় ঔষধ। এই ঔষধটি পাইলস রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধটি আপনারা ক্রিম ও সাপোজিটরি এই দুই ভাবে পাবেন। কিন্তু বাংলাদেশে Erian এই ওষুধটির ক্রিমটি বেশি ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয় মূলত মলদ্বারে ব্যথা, জ্বালাপোড়া, অস্বস্তি বোধ, রক্তক্ষরণ এই সমস্যা গুলো দূর করার জন্য।
আরো পড়ুনঃ নোরিক্স পিল খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
এক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করার নিয়ম হলোঃ প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায়
এই ঔষধটি পাইলস রোগীদের লাগিয়ে নিতে হবে। লাগানোর আগে অবশ্যই পায়খানা করে
নেবেন।
পাইলোস্প্রে
আমাদের মাঝে অনেকে আছে যারা পাইলস হলে ওষুধ খেতে বা কোন ধরনের মলম লাগাতে ভয় পায়। তারা এই পাইলোস্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। এই স্প্রেটি মূলত পাইলস রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হয়। পাইলোস্প্রে ব্যবহারে মলদ্বারে ব্যথা, জ্বালাপোড়া, চুলকানি, রক্তপাত এবং ফোলা ভাবগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
এটি ব্যবহার করার নিয়মঃ এটি ব্যবহার করার আগে পাইলোস্প্রেটি ভালোভাবে ঝাকিয়ে নিতে হবে। তারপর ৪ থেকে ৫ সেন্টিমিটার দূর থেকে দুই থেকে চার সেকেন্ডের জন্য পায়ু অঞ্চলের আক্রান্ত স্থানে ভালো হবে স্প্রে করতে হবে। এটি সব সময় মলত্যাগ করার আগে ও পরে এবং রাতে ব্যবহার করা উচিত হবে।
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, এতক্ষণ আপনাদের সামনে পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম এবং সেই ওষুধগুলোর ব্যবহারবিধি নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছি। আপনি যদি পাইলসের সমস্যায় পড়ে থাকেন তাহলে এই ওষুধগুলো ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়। এখন চলুন পাইলস এর ঔষধি গাছ ও পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে জেনে নেই।
পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ হোমিওপ্যাথি
এতক্ষণ আমরা পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষুধের নাম ও সেই ঔষুধের ব্যবহার সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা জানবো পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে। এবং পরবর্তী পারা থেকে জানবো পাইলস এর ঔষধি গাছ গুলো সম্পর্কে। বর্তমানে এই রোগটি খুবই কমন হয়ে গেছে। ছোট থেকে বড় সবারই এই রোগটি হচ্ছে। পাইলস মূলত চারটি পর্যায় হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যদি আপনার পাইলস প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকে তাহলে হোমিওপ্যাথি ঔষধ ব্যবহার করে খুব সহজে সেই পাইলস থেকে মুক্তি পাবেন এবং এক্ষেত্রে এটি খুবই কার্যকারী হবে।
আরো পড়ুনঃ মেহ রোগের ঔষধের নাম
আর যদি আপনার পাইলস তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে চলে যায় তাহলে লেজার সার্জারি করতে পারেন। তবে হোমিওপ্যাথি ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। এটিতেও ভালো কাজ হয় কিন্তু একটু সময় লাগে। আর আপনি যদি তাড়াতাড়ি মুক্তি পেতে চান তাহলে লেজার সার্জারি করতে পারেন। এখন চলুন পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ হোমিওপ্যাথি কি তা জেনে নেই।
অ্যাসিড নাইট্রিক 200
আপনার যদি পাইলসে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ ও জ্বালাপোড়া হয়। তাহলে আপনি এই
অ্যাসিড নাইট্রিক হোমিওপ্যাথি ওষুধটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহারে দুই দিনের
মধ্যে আপনার পাইলসের রক্তক্ষরণ ও জ্বালাপোড়া কমিয়ে দেবে। এই ওষুধটি দিনে দুইবার
সেবন করতে হবে।
বায়োকেমিক্যাল ক্যালক্যালেরিয়া ফ্লুরিকা 30
যারা পাইলসের সমস্যার কারণে মলদ্বারে ব্যথার কারণে হাত দিতে পারেন না অথবা মলদ্বারের ভিতরে ও বাইরে বোটের মত কিছু হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনারা এই হোমিওপ্যাথিক ওষুধটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাবেন। এই ওষুধটি দিনে তিনবার সেবন করতে হবে।
এ্যাডেল 2
এই ওষুধটি জার্মানি একটি কোম্পানির ঔষধ। এই ওষুধটি পাইলসের জন্য খুবই কার্যকরী
একটি ঔষধ। আপনি যদি পাইলসের সমস্যায় পড়ে থাকেন তাহলে এই ঔষধটি সেবন করতে পারেন।
এই ওষুধটি অনেকগুলো ওষুধের মিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে এটি খুবই
কার্যকারী।
সালফার
সালফার ওষুধটি পাইলসের ভিতরের এবং বাহিরের লক্ষণ গুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য খুবই
কার্যকরী একটি ঔষধ। বিশেষ করে যাদের পাইলসের সমস্যার কারণে মলদ্বারে চুলকানি
কিংবা অত্যাধিক জ্বালাপোড়া করে সাথে ব্যথা থাকে তাদের এই সমস্যাগুলো সারিয়ে
তোলার জন্য এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া
যায়।
আর্সেনিক অ্যালবাম
এই হোমিওপ্যাথিক ওষুধটি ব্যবহার করা হয় মূলত যে সকল পাইলস রোগীদের মলদ্বারের
রাস্তায় বসতে অথবা দাঁড়াতে গিয়ে প্রচন্ড জ্বালাপোড়া ও ব্যথা অনুভূত হয় তাদের
জন্য। এছাড়াও যাদের পাইলস হওয়ার ফলে মলদ্বারের অংশটুকু ফুলে যায় তাদের
ক্ষেত্রেও এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। এবং এই ওষুধটি খুবই কার্যকারী ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ মেহ রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসা
উপরে উল্লেখিত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ গুলো ছাড়াও আরো অনেক হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রয়েছে।
তবে আসল কথা হলো- আপনি যদি পাইলসের সমস্যায় পড়ে থাকেন তাহলে যেকোনো ওষুধ
হোক সেটা এলোপ্যাথিক বা হোমিওপ্যাথিক যেটাই খান না কেন খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ সেবন
করা উচিত নয়। আশা করছি বোঝাতে পেরেছি। এখন চলুন পাইলস এর ঔষধি গাছ কোনগুলো তা
জেনে নেই।
পাইলস এর ঔষধি গাছ
আমাদের মাঝে অনেকে আছে যাদের পাইলস হলে লজ্জায় ডাক্তারের কাছে যায় না। বা ডাক্তারের কাছে গিয়ে কিছু বলতে পারেনা। তাদের পাইলস এর ঔষধি গাছ গুলো সম্পর্কে তাদের জানা উচিত। যেহেতু তারা ডাক্তারের কাছে লজ্জায় কিছু বলতে পারেনা সেহেতু তারা এই ঔষধি কাজগুলো ব্যবহার করে পাইলস থেকে মুক্তি পেতে পারে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে পাইলস এর ঔষধি গাছ কোনগুলো। পাইলস এর ঔষধি গাছ গুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
শিয়াল মতি গাছ
শিয়াল মতি গাছ পাইলস রোগের জন্য খুবই কার্যকরী একটি গাছ। আপনারা যারা পাইলস
রোগের সমস্যায় ভুগছেন তারা এই শিয়াল মতি গাছ খেতে পারেন। এক্ষেত্রে এই গাছের
শিকড় খেতে হবে। খাওয়ার নিয়ম হলোঃ প্রথমে পাঁচটি শিয়ালমতি গাছের পাঁচটি
শিকড় সংগ্রহ করবেন। তারপর শিকড় গুলো ভালোভাবে পরিস্কার করে নেবেন। এরপর শিকড়
গুলো পাটায় ছেচে রস বের করে নেবেন। এরপর যতটুকু পরিমাণ রস হবে ঠিক ততটুকু
পরিমাণ ডালিম গাছের পাতার রস নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নেবেন। এরপর সেই মিশ্রিত রস
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খাবেন। এভাবে প্রতি মাসে অন্তত পাঁচবার খেলে পাইলস রোগ
থেকে খুব তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবেন। আর এই গাছের শিকড় খেলে পাইলস চিরজীবনের জন্য
শরীর থেকে চলে যাবে।
ধুতরা গাছ
আপনি কি চিকিৎসা ছাড়া পাইলস ভালো করতে চান? তাহলে ধুতরা গাছের শিকড় খান। খুব
তাড়াতাড়ি পাইলস থেকে মুক্তি পাবেন। ধুতরা গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম
হলোঃ প্রথমে কিছু ধুতরা গাছের শিকড় সংগ্রহ করবেন। তারপর সেই শিকড়গুলো
ভালোভাবে পরিষ্কার করে পাটায় বেটে রস বের করে নেবেন। এরপর সেই রস সেবন
করবেন। তাহলে দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি আপনি পাইলস থেকে মুক্তি পাবেন। এবং আপনার
শরীরের পাইলস সারা জীবনের জন্য ঠিক হয়ে যাবে।
ত্রিফলা গাছ
ত্রিফলা গাছ বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। যেমন- কোষ্ঠকাঠিন্য, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস, হজম শক্তি বৃদ্ধি, মলত্যাগ করতে সাহায্য করে ইত্যাদি সব রোগের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে এই গাছটি কাজ করে। এছাড়াও ত্বকের সমস্যা সমাধান করার জন্য আপনারা ত্রিফলা ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ কিডনি বিক্রি হাসপাতাল বাংলাদেশ
বর্তমানে ত্রিফলা বিভিন্ন আকারে
পাওয়া যায় যেমন- ত্রিফলার তেল, ত্রিফলার গুঁড়ো, ত্রিফলার ঘি ইত্যাদি। এই
ত্রিফলা গাছ খেলে পাইলস রোগ থেকে খুব তাড়াতাড়ি মুক্তি পাওয়া যায়। তবে এই
গাছের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই ত্রিফলা গাছ খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই
একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করে সেবন করবেন।
অমলতাস গাছ
অমল তাস ঔষধি গাছটি প্রধানত ভারত এবং শ্রীলঙ্কায় পাওয়া যায়। এটি বাংলাদেশ তেমন
পাওয়া যায় না। এই গাছটিতে প্রচুর পরিমাণে রেচক পদার্থ থাকে। এছাড়াও এই গাছটিতে
অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিইনফ্লামেটরি নামক উপাদান থাকে। যা একজন পাইলস রোগীর
জন্য খুবই উপকারী। উপাদান গুলো মূলত শরীরের মলকে নরম করে। যা পাইলস রোগীদের জন্য
খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এই কাজটি রক্ত পরিশোধন ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দূর
করতে সক্ষম। এই গাছটি বর্তমানে বাজারে পাউডার আকারে বিক্রি করা হয় যেগুলো আপনারা
বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ঔষধের দোকানে পাবেন। আপনারা যারা পাইলস রোগের সমস্যায়
ভুগছেন তারা এই গাছটি সেবন করতে পারেন।
দূর্বা ঘাস বা গাছ
দূর্বা যাকে গ্রাম অঞ্চলে থেকে অনেকে দুবলা ঘাস নামে চেনে। এই ঘাসের রস পাইলস সহ
আরো বিভিন্ন স্বাস্থ্য চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। দূর্বা রক্তপাত নিয়ন্ত্রণ
করতে সক্ষম। আপনারা যারা পাইলস রোগের সমস্যায় ভুগছেন তারা দুর্বা ঘাসের রস
প্রতিদিন সেবন করতে পারেন। এটি আপনার বাহ্যিক পাইলসের ব্যথা ও রক্তপাত কমাতে
সাহায্য করবে। সেই সাথে পাইলস চিরদিনের জন্য নিষ্কাশন করে দেবে।
নাগকেশর গাছ
অনেক সময় দেখবেন পাইলস হলে আক্রান্ত স্থান ফুলে যায় ও সেখানে প্রচুর পরিমাণে
প্রদাহ ও জ্বালাপোড়া হয় সেই সাথে ব্যথা হয়। আর এই সমস্যাগুলো দূর করতে নাগকেশর
গাছের ভূমিকা অপরিসীম। এছাড়াও পাইলসের চুলকানি দূর করতে এই গাছ অনেক কার্যকরী।
সাধারণত নাগ কেশর গাছের বীজ পাইলস রোগের জন্য ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে আপনারা
পাইলস রোগের জন্য এই গাছের কিছু বীজ সংগ্রহ করে ব্যবহার করবেন। তবে এই গাছের কিছু
লক্ষণীয় বিষয় রয়েছে যেমন- কিছু কিছু লোকের নাগকেশর থেকে এলার্জি হতে পারে
আবার এই গাছটি অত্যাধিক ব্যবহার করলে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট খারাপ, বমি বমি ভাব হতে
পারে। অবশ্যই এগুলো বিষয় খেয়াল রেখে এই গাছ সেবন করবেন ইত্যাদি।
উপরে উল্লেখিত গাছগুলো ছাড়াও পাইলস এর আরও অনেক ঔষধি গাছ রয়েছে। তবে এই গাছগুলো
বর্তমানে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আপনারা যারা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন তারা
এই কাজগুলো ব্যবহার করে দেখতে পারেন। তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর
পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন।
পাইলস এর খাবার তালিকা
পাইলসের সমস্যাটি মূলত অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন ও খাবারের কারণে বেশি হয়ে থাকে।
তাই আমাদের খাবার সম্পর্কে বেশি সচেতন হওয়া উচিত। শুধু পাইলস বলতে নয় সব ধরনের
রোগ থেকে বাঁচতেই খাবার সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। কারণ খাবার থেকেই সব ধরনের
রোগ ছড়িয়ে পড়ে। আর পাইলস সাধারণত আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া, শাকসবজি কম খাওয়া,
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খাওয়া, বিভিন্ন ধরনের ফ্যাটি ও হাই প্রোটিনযুক্ত খাবার
বেশি খাওয়ার কারণে মূলত পাইলস হয়ে থাকে। তাই পাইলস থেকে বাঁচতে যে সকল খাবার
খেতে হবে তার একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলো।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে কিডনির দাম কত
সবুজ শাকসবজি জাতীয় খাবারঃ
- লাউ
- পালং শাক
- ব্রকলি
- ফুলকপি
- লাল শাক
- বাঁধাকপি
- কচু শাক
- টমেটো
- গাজর ইত্যাদি
রুট জাতীয় খাবারঃ
- শালগম
- কচুর মুখি
- মিষ্টি আলো
- বিট
- কচু
- গাজর ইত্যাদি
- শসা ও তরমুজ
- মুলার জুস
- আদা ও লেবুর রস
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
- ভুট্টা
- গমের ভুসি
- বার্লি
বীজ জাতীয় খাবারঃ
- শিম
- মসুর ডাল
- সয়াবিন
- চিনা বাদাম
- ছোলা ইত্যাদি
- বিভিন্ন ধরনের ফলঃ
- আপেল
- আঙ্গুর
- কিসমিস
- আলুবোখারা
- কলা
- পেঁপে
- নাশপাতি
- বরই
- রাস্পবেরি
- কিউই
- ডুমুর ফল ইত্যাদি
উপরে উল্লেখিত খাবার গুলো পাইলস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। তবে এই খাবারগুলো
খাওয়ার পাশাপাশি যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে তা হলো- গরুর মাংস, হাঁসের
মাংস, তেলে ভাজা খাবার, দুগ্ধ জাত পণ্য, সাদা আটা, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার,
অ্যাল*কোহল, কফি ইত্যাদি সব খাবার এগিয়ে চলতে হবে। তাহলে পাইলস থেকে খুব সহজে
মুক্তি পাওয়া যাবে।
লেখকের শেষকথা - পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম - পাইলস এর ঔষধি গাছ
প্রিয় পাঠক বৃন্দ এতক্ষণ আমরা আপনাদের সাথে পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম ও ঔষধ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা এবং পাইলস এর ঔষধি গাছ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পাইলস কমবেশি সবারই হয়। তবে এই রোগটি হলে ভয় না পেয়ে লজ্জা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। তা না হলে অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। এমনকি পাইলস থেকে ক্যান্সার এবং তার থেকে মৃত্যু হতে পারে। তাই পাইলস হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা করুন।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
আর এই পোস্টটিতে যতগুলো এলোপ্যাথিক ওষুধের নাম বলা হয়েছে। সবগুলো ঔষধি সেবন করার
পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেবন করবেন। এবং পাইলস এর ঔষধি গাছগুলো
ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই একজন স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীর পরামর্শ নিয়ে
ব্যবহার করবেন। আশা করছি পোস্টে পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন। তাই পোস্টটি
সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। কেননা পোস্টটি তো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা
হয়েছে।
Please comment according to Blogger Mamun website policy. Every comment is reviewed.
comment url