মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে আসক্তি কমানোর উপায়
মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে এই প্রশ্নটি এখন কমবেশি সবারই মনে। কারণ বর্তমানে মানুষ মোবাইলের প্রতি এমন আসক্ত হয়েছে যে তারা মোবাইল ফোন ছাড়া আর কিছু বোঝে না। যার কারণে তাদের জীবনযাত্রার ব্যাঘাত ঘটেছে। তাই সবাই এখন মোবাইলের আসক্তি থেকে মুক্তি চায়। তাই এই পোস্টটিতে আমরা আলোচনা করেছি মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে এবং মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমানোর উপায় সম্পর্কে।
মোবাইল ফোন আসক্তি কি - মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে
মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে এবং আসক্তি কমানোর উপায় জানার আগে জেনে নেই
মোবাইল ফোন আসক্তি আসলে কি।
কিছু গবেষক রয়েছে যারা মোবাইল ফোন আসক্তিকে মোবাইল ফোনের উপর মানুষের আচরণগত বা
মনস্তাত্ত্বিক নির্ভরতার একটি রূপ হিসেবে প্রস্তাব করেছেন। আবার অন্যান্য গবেষকরা
এটিকে মানুষের আচরণগত আসক্তির সাথে সম্পর্কিত করে দাবি করেছে। মূলত এই ধারণাগুলো
থেকেই মোবাইল ফোন আসক্তি শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ ডিস লাইন ছাড়া টিভি দেখার উপায়
মোবাইল ফোন আসক্তি বলতে বোঝায়- মোবাইল ডিভাইসের বাধ্যতামূলক ব্যবহার যেটি
একটি ব্যাধির সাথে জড়িত। এটি এমন একটি কাজ যা মানুষের মানসিক, শারীরিক, ও
সামাজিকভাবে ক্ষতি করে বা মানুষ তার নিজস্ব ক্ষতি সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও সে
কাজের প্রতি মানুষ অপ্রতিরোধ্য ইচ্ছা পোষণ করে তাকেই মূলত মোবাইল ফোন আসক্তি বা
আসক্তি বলা হয়।
আসলে মোবাইল ফোন আসক্তি কখন হয় যখন একটি মানুষ তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ব্যবহার করে এবং সে মোবাইল ফোন নিয়ে এতই ব্যস্ত হয়ে
যায় যে তার অন্য কোন কাজের কথা মনেই থাকে তখনই মূলত এটিকে আমরা মোবাইল ফোন
আসক্তি বলতে পারি। আশা করছি আপনারা মোবাইল ফোন আসক্তি কি তা বুঝতে পেরেছেন।
এখন চলুন মোবাইল আসক্তির কারণ জেনে নেই।
মোবাইল আসক্তির কারণ কি - মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে
বর্তমানে মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি দিন দিন বেড়েই চলছে। বিশেষ করে
শিশু-কিশোরদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে করোনার
সময় দেশের প্রায় ৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে।
এই মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো-
- সহজলভ্য ইন্টারনেট ও ইন্টারনেটভিত্তিক গেমস ও নানার ভিডিও দেখা।
- মূল্যবান সময় গুলো টিকটক ও লাইকি তে ভিডিও দেখে নষ্ট করা।
- খেলাধুলা করার সুযোগ না পাওয়া।
- বন্ধু-বান্ধবদের সাথে না মেশা।
- সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে ঘুরতে না যাওয়া।
- পরিবারের সকল সদস্যরা একসাথে বসে খাবার না খাওয়া বা আড্ডা না দেওয়া।
- ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা।
- লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগ না দেওয়া।
- বাবা-মা সন্তানের প্রতি সচেতন না থাকা।
- ছেলে মেয়েদের হাতে অল্প বয়সেই মোবাইল তুলে দেওয়া।
- পরিবার ছোট হয়ে যাওয়া।
- ছোট বাচ্চাদের সাথে গল্প না করা বা গল্প করার পরিবর্তে মোবাইল ফোন হাতে তুলে দেওয়া।
- কাজ করার সুযোগ না থাকা ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ মোবাইলে ফ্রি টিভি দেখার উপায়
উপরের উল্লেখিত কারণগুলো ছাড়াও আরো অনেক কারণ রয়েছে যেগুলোর জন্য বর্তমানে
মানুষ মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। গবেষকরা মনে করছেন মানুষের মোবাইলের
প্রতি বেশি আসক্তি এক সময় পৃথিবীতে অনেক বড় বিপর্যয় ডেকে আনবে। আশা করছি
আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এখন চলুন মোবাইল আসক্তি কুফল গুলো জেনে নেই।
মোবাইল আসক্তির কুফল গুলো জানুন - মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে
যদিও মোবাইল ফোন ব্যবহারের অনেক সুবিধা ও সুফল রয়েছে। তারপরও মোবাইল ফোন ব্যবহার করার অনেক কুফল রয়েছে। যেগুলো জানলে আপনারা অবাক হয়ে যাবেন। যদিও এই পোস্টটিতে আমরা মোবাইল ফোনের সুফল বা সুবিধা নিয়ে আলোচনা করছি না। এই পোস্টটিতে শুধুমাত্র আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো মোবাইলে দেখি আসক্তি কমাবো কিভাবে এই সম্পর্কে এবং এই প্যারাটি থেকে আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো মোবাইল আসক্তি কুফলগুলো কি এই সম্পর্কে। চলুন তাহলে মোবাইল আসক্তি কুফল গুলো জেনে নেই।
- শরীরে ব্যাকপেইনের সমস্যা হতে পারে
- দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হতে পারে
- স্নায়ুর সমস্যা হতে পারে
- উদ্বিগ্ন এবং হতাশার দেখা দিতে পারে
- অত্যাধিক মানসিক চাপ দেখা দেবে
- দৈনন্দিন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে
- শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আশ্রয়স্থল তৈরি হবে
- অ*শ্লীল ভিডিও দেখার কারণে নেতিবাচক অনুভূতির সৃষ্টি হবে
- শ্রবণ শক্তি সমস্যা দেখা দেবে
- মূল্যবান সময়গুলো মোবাইলের পিছনে নষ্ট হবে
- মাথাব্যথা, ঘাড় ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা গুলো দেখা যাবে
- অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা
- চিন্তা শক্তি কমে যায়
- পর্নো ভিডিওতে আসক্ত হয়ে পড়া
- সৃজনশীল ক্ষমতা কমে যাওয়া
- শরীর ক্লান্ত বোধ করা
- ডিপ্রেশন দেখা দেওয়া
- নোমোফোবিয়া নামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়া
- মোবাইল যোগাযোগে ব্যস্ততা দেখা দেবে
- মোবাইল ফোনে অত্যাধিক অর্থ ও সময় ব্যয় করা
- শারীরিকভাবে অনুপযুক্ত পরিস্থিতি মোবাইল ফোনের ব্যবহার
- স্লিপ মেসেজিং এর সমস্যা দেখা দিতে পারে
- অতিরিক্ত মেসেজিং করার ফলে হাতের আঙ্গুলে ব্যথা হতে পারে
- অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে মস্তিষ্কে ক্যান্সারের সমস্যা দেখা দিতে পারে
- অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে শুক্রানুর ঘনত্ব কমিয়ে দিতে পারে
- শিশু-কিশোরদের অনৈতিক কাজের প্রতি প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে
- বিভিন্ন ধরনের অপরাধে লিপ্ত হওয়া ইত্যাদি
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেডিকেল কলেজ কোনটি?
এছাড়াও মোবাইল আসক্তি আরো অনেক কুফল রয়েছে। যেগুলো আমরা পরবর্তীতে কোন একটি
পোস্টে আলোচনা করবো। এখন চলুন আমরা শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় গুলো জেনে
নেই।
শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় জেনে নিন
মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোন যে যাই বলি এটি বর্তমানে আমাদের নিত্যদিনের অপরিহার্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্ত হয়েছে। শিশুদেরকে শান্ত রাখার জন্য বর্তমানে বেশিরভাগ অভিভাবকরাই তাদের সন্তানদের হাতে স্মার্টফোন বা মোবাইল ফোন তুলে দিচ্ছে। যার ফলে শিশুরা মোবাইল ফোনের প্রতি দ্রুত আসক্ত হয়ে পড়ছে। মোবাইল ফোন থেকে নির্গত হওয়ার রেডিয়েশন যেমন শিশুর মস্তিষ্কের ক্ষতি করছে তেমনি মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার কারণে তাদের চোখ ও কানের সমস্যা হচ্ছে।
এছাড়াও অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার কারণে শিশুরা অনেক ধরনের সমস্যায় জড়িত
হচ্ছে। যার ফলে বর্তমানে বেশিরভাগ অভিভাবকরাই এখন শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর
উপায় জানতে চাচ্ছে। এর পাশাপাশি তারা এটাও জানতে চাচ্ছে যে মোবাইলে প্রতি আসক্তি
কমাবো কিভাবে এই সম্পর্ক। চলুন এখন আমরা শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় গুলো
জেনে নেই। পরের প্যারাটি থেকে মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে এই সম্পর্কে
জানবো।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা সরকারি মেডিকেল কলেজের তালিকা
শিশুদের সামনে কখনোই মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না
শিশুরা সবসময় অনুকরণ প্রিয় হয়। তারা একজনকে কোন জিনিস ব্যবহার করতে দেখলে
নিজেও সেই জিনিস ব্যবহার করতে চায়। তাই আপনি যখন শিশুদের সামনে মোবাইল ফোন
ব্যবহার করবেন বিভিন্ন কাজের জন্য। তখন আপনার শিশু চাইবে মোবাইল ফোন ব্যবহার
করতে। এছাড়াও আপনি যখন আপনার সন্তানদের সামনে মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও, গেমস
ইত্যাদি বিষয়গুলো দেখবেন। তখন আপনার শিশুও সেই গুলো দেখার জন্য মোবাইলের প্রতি
আগ্রহী হয়ে উঠবে। তাই কখনোই শিশুদের সামনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না।
শিশুদের সঙ্গে সবসময় কথা বলার চেষ্টা করুন
অনেক বাবা-মা এই শিশুদেরকে চুপ করে রাখার জন্য বা খাবার খাওয়ানোর জন্য মোবাইল
ফোন হাতে তুলে দেয়। এই কাজটি ভুলেও করবেন না। বরং মোবাইল ফোন হাতে
তুলে না দিয়ে তাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের কথা বলুন যেমন বই পড়ে শোনান, বিভিন্ন
ধরনের গল্প বলুন, কবিতা শোনান, বিভিন্ন ধরনের রূপকথার গল্প বলুন ইত্যাদি
বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সাথে সবসময় কথা বলার চেষ্টা করুন। তাহলে তারা মোবাইলের
প্রতি আসক্তি হবে না।
শিশুকে সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন
শিশুদেরকে সবসময় বিভিন্ন ছবি আঁকা, নতুন কিছু বানানো, বা গাছের
পরিচর্যা ইত্যাদি কাজগুলো করতে উৎসাহিত করে তুলুন। আপনার বাড়ির আশেপাশে যদি
কোন পার্ক থাকে তাহলে তাদেরকে নিয়ে সেখানে ঘুরতে যান। আপনাদের ঘরের শিশুদেরকে
সাহায্য করতে বলুন। ইত্যাদি কাজগুলো শিশুদেরকে দিয়ে করান। তাহলে দেখবেন তারা
মোবাইলের প্রতি আসক্ত হবে না।
আপনার মোবাইলে অবশ্যই পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখুন
বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় আপনি যখন আপনার মোবাইল ফোনটি বাসায় রেখে কোথাও চলে
যান। তখন আপনার শিশু সেই ফোনটি হাতে নিয়ে টিপাটিপি করে। তাই সব সময় মোবাইলে
পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখুন। যাতে করে আপনার শিশু মোবাইল হাতে পেলেও টিপাটিপি করতে না
পারে।
পারিবারিক সময়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষেধ করুন
পরিবারের সবাই মিলে যখন একসাথে সময় কাটান যেমন খাওয়া-দাওয়ার সময়, পরিবারের
সবাই মিলে কোন টুর বা ঘুরতে যাওয়ার সময়, পরিবারের সবাই মিলে বসে একসাথে আড্ডা
দেওয়া ইত্যাদি কাজগুলোতে আপনাদের সন্তানকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে নিষেধ
করুন।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা বেসরকারি মেডিকেল কলেজের তালিকা
বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ রাখবেন না
যদিও নিজেদের প্রয়োজনে বা ব্যবসায়িক কাজের জন্য বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ রাখতে
হয়। তারপরও সব সময় চেষ্টা করবেন বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ না রাখার। আর যদি
ইন্টারনেট সংযোগ রাখার একান্তই প্রয়োজন হয় তাহলে আপনার শিশুর মোবাইল ফোনে
ইন্টারনেট সংযোগ দেবেন না।
শিশুকে ঘরের বাইরে পাঠান
শিশুদেরকে সব সময় ঘরের মধ্যে আটকে রাখবেন না। তাদেরকে খেলাধুলা করার জন্য বাইরে
পাঠিয়ে দেবেন। প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে আপনার শিশুকে পরিচয় করিয়ে দেবেন। যাতে
করে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বাইরে গিয়ে খেললে আপনার শিশুকে উপহার
দেওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে দেখবেন আপনার শিশু মোবাইলের প্রতি আসক্ত হবে না।
সময় বেঁধে দিন
বর্তমানে বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই বাচ্চাদের অনলাইনে ক্লাস নিয়ে থাকে। যার
কারণে বাচ্চাদেরকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার অনুমতি দিতেই হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে
আপনি আপনার বাচ্চার হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেওয়ার আগে সময় বেঁধে দেবেন। যাতে করে
ক্লাস সময়ের পরেও আপনার শিশু মোবাইল ব্যবহার করতে না পারে।
এছাড়াও আরো অনেক ভাবে শিশুদেরকে মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে মুক্ত করা যায়।
এছাড়াও শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর আরো অনেক উপায় রয়েছে। যেগুলো আপনারা
পরিস্থিতি অনুযায়ী বুঝতে পারবেন। এখন চলুন আমরা মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো
কিভাবে আসক্তি কমানোর উপায় জেনে নেই।
মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে আসক্তি কমানোর উপায়
বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। এই যুগে মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করবে এটিই স্বাভাবিক। তবে সেটি যেন অতিরিক্ত মাত্রায় না হয়। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে মানুষ মোবাইল ফোন এত পরিমাণে ব্যবহার করছে যা তাদের নেশা বা আসক্তিকে রূপান্তর হয়েছে। বর্তমানে এমন একটি পরিস্থিতি হয়েছে যেখানে মানুষের ভাত না হলেও চলবে কিন্তু মোবাইল ফোন ছাড়া সে এক মুহূর্ত থাকতে পারবে না। এই মানুষটি জানে যে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে হতে পারে বিরাট সমস্যা।
আরো পড়ুনঃ এশিয়ার সবচেয়ে বড় মেডিকেল কলেজ
একটি গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে মস্তিষ্কে
ক্যান্সার হতে পারে। এছাড়া আরো অনেক ধরনের রোগ হতে পারে যেগুলো আমাদের কল্পনারও
বাইরে। তাই বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে এই
সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এই পোস্টটিতে আমরা মোবাইলের প্রতি আসক্তি
কমাবো কিভাবে আসক্তি কমানোর উপায় নিয়ে নিচে আলোচনা করেছি।
মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে এই প্রশ্নটি কম বেশি এখন সবারই মনে। তাই চলুন
জেনে নেই মোবাইলে প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে এই সম্পর্কে।
নোটিফিকেশন নিয়ন্ত্রণঃ মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি কমাতে আপনার
ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অপ্রয়োজনীয় সব নোটিফিকেশন বাদ দিয়ে দিতে হবে।
যেমন ধরুন- সোশ্যাল মিডিয়া নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা, ফেসবুক, ইউটিউব,
ইনস্টাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদি বিভিন্ন সাইটের নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখতে হবে।
নির্দিষ্ট সময়ে মোবাইল ব্যবহার করাঃ মোবাইল ফোন বর্তমানে সবারই
প্রয়োজনই একটি মাধ্যম। তাই এটি ব্যবহার যে করবেন না তা নয় বরং মোবাইল ফোনটি
নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহার করবেন। কারণ মনে রাখবেন আপনি যত বেশি মোবাইল ফোন
ব্যবহার করবেন, তত বেশি আপনি মোবাইলে আসক্ত হবেন। তাই মোবাইল ফোন সব সময়
নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহার করবেন।
ঘুমের সময় মোবাইল ফোন দূরে রাখুনঃ আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা
ঘুমানোর আগে মিনিমাম দুই থেকে তিন ঘন্টা সময়ের টিপাটিপি করে। এবং তারপর মোবাইল
ফোন পাশে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। যার কারণে মোবাইলে কোন ফোন বা নোটিফিকেশন আসলে সাথে
সাথে জেগে যায়। তাই ঘুমানোর সময় সব সময় চেষ্টা করবেন মোবাইল ফোন দূরে
রাখার।
খাওয়ার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুনঃ আমাদের মাঝে
এমন অনেক মানুষই আছে যারা খাবার খাওয়ার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার না করলে তাদের
খাবার হজমই হবে না। কিন্তু এই কাজটি আপনি ভুলেও করবেন না। খাবার খাওয়ার সময়
মোবাইল ফোন ব্যবহার না করে খাবার উপভোগ করার চেষ্টা করুন। এতে আপনি সহজেই মোবাইল
ফোন আসক্তি থেকে মুক্তি পাবেন।
খেলাধুলার প্রতি মনোযোগী হনঃ এখন বর্তমানে বাংলাদেশের বেশিরভাগ
মানুষই খেলাধুলা করে। কিন্তু তারা মাঠে খেলাধুলা না করে মোবাইলে খেলাধুলা করে।
যেগুলো একটি মানুষকে মোবাইলের প্রতি আরো বেশি আসক্ত করে তোলে। তাই মোবাইলে
খেলাধুলা না করে সব সময় মাঠে খেলাধুলার করার চেষ্টা করুন।
বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সময় কাটানঃ অনেকেই বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে
মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। কিন্তু আপনি মোবাইল ফোন ব্যবহার না করে বন্ধু-বান্ধবদের
সাথে সময় কাটান। তাদের সাথে আড্ডা দেন, ঘোরা ফেরা করেন, খেলাধুলা করে,
বন্ধু-বান্ধবরা মিলে একসাথে রান্না করে খান ইত্যাদির মাধ্যমে বিনোদন উপভোগ করার
চেষ্টা করুন। তাহলে আপনি খুব সহজেই মোবাইলের আসক্তি থেকে মুক্তি পাবেন।
মোবাইলে যতটা সম্ভব কম অ্যাপস রাখুনঃ মোবাইলে রাখা গেমসগুলো আমাকে সব
সময় মোবাইলের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। তাই সব সময় মোবাইল ফোনের কম অ্যাপস
রাখার চেষ্টা করুন। মোবাইলে কোন ধরনের গেমস রাখা থেকে বিরত থাকুন। তাহলে খুব
সহজেই মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
বেশি বেশি বই পড়ায় অভ্যাস করুনঃ বিভিন্ন ধরনের গল্প, উপন্যাস,
কবিতা, ইনভেস্টিগেশন গল্পের বই ইত্যাদি জাতীয় বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাহলে
আপনি খুব সহজেই মোবাইলের প্রতি আসক্তি দূর করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ iPhone 14 pro Max এর ফুল স্পেসিফিকেশন
স্মার্টফোন বাদ দিয়ে বাটনফোন ব্যবহার করুনঃ আপনি যখন একটি বাটনফোন
ব্যবহার করবেন তখন আপনার মোবাইলের প্রতি এমনিই আসক্তি কমে আসবে। কারণ আপনি বাটন
ফোন দিয়ে ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, টিকটক ইফতারি অ্যাপস গুলো চালাতে
পারবেন না। যেগুলো আপনাকে মোবাইল ফোন আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করবে। তাই স্মার্টফোন বাদ দিয়ে বাটনফোন ব্যবহার করার চেষ্টা করুন
ইত্যাদি।
আশা করছি আপনারা মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে
গেছেন। এছাড়াও আপনারা আরো অনেক উপায়ে মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি কমিয়ে আনতে
পারবেন। যেগুলো আপনারা বিভিন্ন পোস্ট থেকে জানতে পারবেন।
আমাদের শেষকথা
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আজকের পোস্টটিতে আমাদের মূল আলোচনার বিষয় ছিল মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমাবো কিভাবে ও এই আসক্তি কমানোর উপায় কি এই সম্পর্কে। এছাড়াও আমরা এই পোস্টটিতে শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। আসলে সত্যি কথা বলতে মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি কমানো এটি সম্পূর্ণ নিজের উপর নির্ভর করে।
কেউ যদি চায় যে সে মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেনা সে পারবে। শুধু হিম্মত করতে
হবে। আর লাগবে দূঢ় আত্মবিশ্বাস। আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এই পোস্টটি পড়ে
আপনি যদি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি অন্যদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে
উপকৃত হওয়ার সুযোগ করে দিন।
Please comment according to Blogger Mamun website policy. Every comment is reviewed.
comment url