অপারেশন ছাড়া পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ ও ঘরোয়া উপায়

আপনি কি পিত্তথলির পাথরের সমস্যায় ভুগছেন? এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান? জানতে চান অপারেশন ছাড়া পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ ও ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে। যদি জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। কেননা, এই পোস্টটিতে আমরা অপারেশন ছাড়া পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ ও পিত্তথলির পাথর দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

অপারেশন ছাড়া পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ ও ঘরোয়া উপায়
বর্তমানে নানা কারণে মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। এই জটিল রোগ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পিত্তথলির পাথর হওয়া। আর এই পাথর হলে অনেকেই অপারেশন করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে বাজারে অপারেশন ছাড়া পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ পাওয়া যায়। এছাড়াও ঘরোয়া পদ্ধতিতে পিত্তথলির পাথর দূর করা যায়। কিন্তু অনেকেই তা জানে না। তাই এই পোস্টটিতে আমরা অপারেশন ছাড়া পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ ও ঘরোয়া উপায় গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। জানতে চাইলে অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

পিত্তথলিতে পাথর কেন হয় জানুন

পিত্তথলিতে পাথর কেন হয় এটি জানার আগে আগে জানতে হবে পিত্তথলির পাথর কি। পিত্তথলির পাথর হলো ছোট ছোট বালু দানার মতো বা মটরের দানার মতো অথবা তার চাইতেও বড় কোন শক্ত দানাদার বস্তুর মতো দেখতে, যা বিভিন্ন রঙের ও বিভিন্ন আকৃতি হয়ে থাকে। পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হয় কোলেস্টরেল, বিলিরুবিন, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি সব পদার্থের সংমিশ্রণে যেটি অনেক সময় হালকা বাদামি ময়লাটে সাদা বা কুচকুচে কালো রঙের হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ পেটে গ্যাস হলে কি কি লক্ষণ দেখা দেয় 

এখন আসি পিত্তথলিতে পাথর কেন হয়। পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। পিত্তথলি আমাদের শরীরের পেটের ডান দিকে যকৃতের পেছনে ও তলার দিকে থাকে। এই পিত্তথলি থেকে নিঃসৃত রস আমাদের শরীরের খাওয়ার হজমের সাহায্য করে। আমাদের শরীরে যখন কোলেস্টরেল, ক্যালসিয়াম, বিলিরুবিন ইত্যাদি সব পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যায় তখন পিত্তরস ক্ষরণে বাধা সৃষ্টি হয়। যার কারণে পিত্তথলিতে পাথর জমে। এছাড়াও পিত্তথলিতে পাথর জমানার আরো অনেক কারণ রয়েছে। যেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

  • শরীরের ওজন অত্যাধিক পরিমাণে বেড়ে গেলে পিত্তথলির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে যায়। যার ফলে সেখানে পাথর হতে পারে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি সেবন না করলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • যদি কারো ডায়াবেটিস থেকে থাকে তাহলে তাকে সতর্ক হতে হবে কারণ ডায়াবেটিস থেকেও পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে।
  • অনেক সময় বংশগত কারণে এই রোগ হতে পারে। তাই সব সময় সাবধান বা সতর্ক থাকা উচিত।
  • কোলেস্টেরলের, বিলিরুবিন ও ক্যালসিয়াম ইত্যাদি সব পদার্থের মাত্রা বেড়ে গেলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • অসময়ে খাবার ও গর্ভনিরোধক পিল খেলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • পিত্তথলির ভিতরে পিত্তরসের পানি ও ফ্যাটের পরিমাণ এর মধ্যেও যদি অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয় তাহলে পিত্তথলিতে পাথর সৃষ্টি হয়।
  • লিভারে কোন ধরনের সমস্যা থাকলে সেখান থেকে পিত্তথলিতে পাথর হওয়া সম্ভাবনা থাকে ইত্যাদি।

এছাড়াও আরো অনেক কারণ রয়েছে যেগুলোর কারণে পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে। আসলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। তবে কোলেস্টেরল, বিলিরুবিন ইত্যাদি সব পদার্থের পরিমাণ অত্যাধিক পরিমাণে বেড়ে গেলে পিত্তথলিতে পাথর সৃষ্টি হয়। আর এই পদার্থ দুটির কারণেই বর্তমানে পিত্তথলিতে বেশি পাথর হচ্ছে। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন এখন চলুন পিত্তথলির পাথর এর লক্ষণ ও পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে।

পিত্তথলির পাথর এর লক্ষণ গুলো জেনে নিন

পিত্তথলির পাথর কি, পিত্তথলিতে পাথর কেন হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে আমরা জেনেছি। এখন আমরা জানবো পিত্তথলির পাথর এর লক্ষণ গুলো কি কি। কোন লক্ষণ বা উপসর্গ গুলো দেখা দিলে আপনি বুঝবেন যে আপনার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। পিত্তথলিতে পাথর হলে আমাদের শরীরে অনেক ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়। যে লক্ষণগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

আরো পড়ুনঃ কিডনির সমস্যা হলে কি খেতে হয়?

  • পেটের উপরের ডান দিকে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয় এবং সেই ব্যথা ডান কাঁধে ছড়িয়ে যায়।
  • রোগীর বমি বমি ভাব হবে।
  • অনেক সময় রোগীর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসতে পারে।
  • অনেক সময় মধ্যপেটে ব্যথা হতে পারে এবং সেই ব্যথা পিছনের দিকে চলে গেলে একটি পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ।
  • প্রস্রাব হলুদ বা গাঢ় খয়েরি রং হলে।
  • প্রথমের জ্বর তারপর বমি হলে।
  • হঠাৎ করে এই শরীরে উচ্চমাত্রায় জন্ডিস দেখা দিলে।

উপরে উল্লিখিত লক্ষণ গুলো যদি আপনার মধ্যে দেখেন তাহলে ধরেই নিতে পারেন যে আপনার পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে। আর এটি চেক করার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের সাথে কথা বলবেন এবং আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে পারেন। এখন চলুন জেনে নেই পিত্তথলিতে পাথর হলে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ গুলো সম্পর্কে।

পিত্তথলিতে পাথর হলে কি কি সমস্যা হয়

আমাদের মাঝে অনেকেই জানতে চাই যে পিত্তথলিতে পাথর হলে কি কি সমস্যা হয়। তাই এই পোস্টটিতে আমরা পিত্তথলিতে পাথর হলে কি কি সমস্যা হয় এই নিয়ে আলোচনা করবো। ধরুন, আপনার পিত্তথলিতে বিভিন্ন কারণে পাথর হয়েছে। এখন আপনি যদি সেটি অপারেশন না করেন অথবা পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ খেয়ে সেটি গলিয়ে না ফেলেন তাহলে আপনাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। যেই সমস্যাগুলো নিজে তুলে ধরা হলো।

  • পিত্তথলিতে পাথর হলে যেকোন সময় প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে।
  • পিত্তথলির পাথর খাদ্যনালী বন্ধ করে দিতে পারে।
  • পিত্তথলির পাথর থেকে ইনফেকশন এবং পরে ক্যান্সার হতে পারে।
  • আর পিত্তথলির ক্যান্সার খুবই ভয়াবহ আকার ধারণ করে। পিত্তথলিতে ক্যান্সার হলে রোগী সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৯ মাস বাঁচে।
  • হজমে সমস্যা হতে পারে ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী হওয়ার ১ম সপ্তাহের লক্ষণ

উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো ছাড়াও আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই পিত্তথলিতে পাথর হলে অবহেলা না করে অবশ্যই অপারেশন করবেন অথবা পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ খেয়ে তা গলিয়ে ফেলবেন।

পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ 

আমাদের মাঝে অনেকেই গুগলের সার্চ করে জানতে চাই পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ সম্পর্কে। তাই আজকের এই পোস্টটিতে আমরা পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এই পোস্টটি থেকে আপনারা পিত্তথলির কোন পাথরগুলো ঔষধের মাধ্যমে গলানো সম্ভব তাও জানতে পারবেন। তাই মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পিত্তথলির পাথর সাধারণত তিন রকমের হয়ে থাকে

  • পিগমেন্ট স্টোন
  • কোলেস্টেরল স্টোন
  • মিক্সড স্টোন

এক্ষেত্রে যদি আপনার পিত্তথলিতে কোলেস্টরেল স্টোন পাথরটি হয় তাহলে সেটি ওষুধের মাধ্যমে গলিয়ে ফেলা সম্ভব। এক্ষেত্রে সাধারণত পিত্তথলিতে একটি পাথর থাকে। যার ফলে সেটি ওষুধের মাধ্যমে গুলিয়ে ফেলা যায়। এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় লক্ষণই হলো আপনার পিত্তথলির পাথর যদি একটি এবং ছোট আকারের হয় তাহলেই শুধু ওষুধের মাধ্যমে এই পাথর গলিয়ে ফেলা সম্ভব। আর যদি পাথর বড় আকারের হয় তাহলে ঔষধ অনেকদিন সেবন করতে হয় এবং দেখা যায় অনেক সময় এটি গলানো সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে আপনাকে অপারেশন করতে হবে। এখন চলুন পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ গুলোর নাম জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ নরমেন্স খেলে কি মাসিক বন্ধ হয়

  • আরসোডিঅক্সিকোলিক এসিড
  • চেনোডিয়াল 
  • Antigall
  • Liconor
  • Bilicir
  • Stener
  • Liveric
  • Uliv
  • Surliv
  • Ursoren
  • Uliv
  • Ursodex
  • Carduas
  • Upodol
  • Colesterinum
  • Ursodil

পিত্তথলির পাথর গলানোর হোমিও ঔষধ

  • ক্যালকেরিয়া কার্বনিকা
  • লাইকোপোডিয়াম
  • teletonium
  • সালফারিকাম
  • নেট্রাম
  • Chinonanthus V
  • Chelidonium Majus
  • Berberis Vul

উপরে উল্লেখিত ঔষধ গুলো ছাড়াও বর্তমানে পিত্তথলির পাথর গলানোর জন্য বাজারে আরও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। কিন্তু আপনাদেরকে বলে রাখি- সত্য কথা বলতে পিত্তথলির পাথর হলে কোন ঔষধ দিয়ে সেটি গলানো সম্ভব নয় এই কথাটি চিকিৎসকেরা বলেছেন। কিন্তু আপনার যদি পিত্তথলির কোলেস্টরেল স্টোন পাথর হয় তাহলে এই ওষুধগুলো সেবন করে দেখতে পারে। তবে এই ওষুধগুলো সেবন করার পূর্বে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে। এখন চলুন পিত্তথলির পাথর দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নেই।

পিত্তথলির পাথর দূর করার ঘরোয়া উপায়

বর্তমানে মানুষের মাঝে পিত্তথলির পাথর হওয়ার সমস্যাটি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে নারীদের মাঝে পিত্তথলির পাথর এর সমস্যাটি বেশি দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে পিত্তথলিতে যদি পাথর বড় হয়ে যায় তাহলে আপনাকে অবশ্যই অপারেশন করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ঔষধ বা ঘরোয়া উপায়ে পাথর গলানো সম্ভব হবে না। তবে আপনি যদি পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণগুলো আগে থেকে বুঝতে পারেন বা আপনার পিত্তথলিতে পাথর এখনো বড় হয়নি কেবল হচ্ছে বা পাথর হলেও অনেক ছোট আকার আছে, তাহলে আপনি পিত্তথলির দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার করতে পারেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে পিত্তথলির পাথর দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো কি? উপায়গুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

কাঁচা হলুদ

পেটের যেকোন সমস্যা দূর করতে কাঁচা হলুদ খুবই উপকারী। কারণ হলুদে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নামক উপাদান। যা পিত্তথলির পিত্তরসকে ঠিক রাখে। 

আরো পড়ুনঃ ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ

তাই আপনি যদি রোজ সকালে খালি পেটে মধুর সঙ্গে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে পিত্তথলির পাথর দূর করতে এটি আপনাকে খুবই সাহায্য করবে। এতে আপনার শরীরে অনেক ভালো থাকবে।

নারকেলের তেল

নারকেলের তেল পিত্তথলির পাথর দূর করার অন্যতম একটি উপাদান। আপনি যদি দৈনিক তিন চামচ নারকেলের তেলের সঙ্গে এক চতুর্থাংশ আপেলের রস এবং ৫ কোয়া রসুন ও এক টুকরো আদা ক্ষেত্র করে খেতে পারেন, তাহলে আপনার পিত্তথলির পাথর খুব সহজেই গলে যাবে। আর এটি হবে শুধুমাত্র যখন আপনার পিত্তথলির পাথরটি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকবে তখন।

ক্র্যানবেরির জুস

পিত্তথলিতে পাথর সাধারণত শরীরের কোলেস্টরেলের মাত্রা যদি বেড়ে যায় তাহলে হয়। এছাড়াও আরো নানা কারণে হতে পারে তবে কোলেস্টরেলের কারণেই মূলত এই পাথর বেশি হয়। তাই আপনি যদি ক্র্যানবেরির জুস খেতে পারেন তাহলে পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধ করতে পারবেন। কারণ ক্র্যানবেরির জুসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা কোলেস্টোলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। আর কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকলেই পিত্তথলিতে পাথর হবে না।

লেবুর রস

পেটের যেকোনো রোগ সারাতে লেবুর রসের বিকল্প নেই। তবে বেশি লেবুর রস খেলে আবার গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। লেবুর রসের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যা পিত্তথলিতে পাথর আটকাতে সক্ষম। তাই আপনি পিত্তথলিতে পাথর দূর করার জন্য প্রতিদিন সকালে লেবুর রস এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খালি পেটে খেতে পারেন।

আপেল

আপেল এমন একটি ফল যে ফলটিকে প্রচুর পরিমাণে ম্যালিক এসিড নামক উপাদানটি থাকে। যেটি পিত্তথলির পাথর গলাতে সহায়তা করে। তাই আপনি পিত্তথলির পাথর দূর করতে নিয়মিত একটি করে আপেল খেতে পারেন। এতে করে আপনার পিত্তথলির পাথর যেমন ঠিক হবে তেমনি শরীরের অন্যান্য উপকারিতা পাবেন। এছাড়া আপেল শরীরের পাচন ক্রিয়াকলা ভালো রাখতে সাহায্য করে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান

পানির অপর নাম জীবন এটি আমরা সবাই জানি। আর এই পানি পিত্তথলির পাথর দ্রবীভূত করার অন্যতম প্রাকৃতিক উপায়। তবে সেই পানিটি অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি হতে হবে। পানি আমাদের শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টরেল বের করে দিতে সাহায্য করে। আর পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার অন্যতম কারণ যেহেতু কোলেস্টেরল। তাই কোলেস্টরেল দূর করতে পারলে পিত্তথলির পাথর দূর হয়ে যাবে। এজন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি সেবন করতে হবে তবে সেই পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ হতে হবে।

নাশপাতির রস

নাশপাতিতে রয়েছে পেক্টিন নামক উপাদান যেটি শরীরে কোলেস্টেরল গঠন এবং জমা হতে বাধা দেয়। তাই পিত্তথলির পাথর দূর করার জন্য আপনি নাশপাতির রস সেবন করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রতিদিন এক গ্লাস গরম পানির সাথে এক গ্লাস নাশপাতির রস এবং দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। এভাবে প্রতিদিন তিনবার পান করুন।

পুদিনা পাতার রস

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে পুদিনা পাতা অন্যতম। পুদিনা পাতায় রয়েছে টারপেনিস নামক উপাদান যা পিত্তথলির পাথর গলানোর সহায়ক বলে মনে করেন অনেক চিকিৎসক। পুদিনা পাতার তৈরিকৃত চা সেবনে ব্লাডারের পাথর থেকে বাঁচা যায়। এছাড়াও পিত্তথলির পাথর দূর করতে পুদিনা পাতার রসের ভূমিকা অপরিসীম। তাই পিত্তথলির পাথর দূর করতে আপনি প্রতিদিন দুইবার পুদিনা পাতার চা অথবা পুদিনা পাতা গরম পানি সিদ্ধ করে খেতে পারেন। অথবা পুদিনা পাতা থেকে সেই রস খেতে পারেন ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ছেলে না মেয়ে বোঝার উপায়

উপরে উল্লেখিত ঘরোয়া উপায় গুলো শুধুমাত্র যাদের পিত্তথলির পাথর কেবলমাত্র প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে অথবা ছোট আকার ধারণ করেছে তাদের ক্ষেত্রে। তবে যাদের পিত্তথলিতে পাথর হয়ে গেছে মাঝারি অথবা বড় হয়ে গেছে তাদের অবশ্যই অপারেশন করা উচিত। কারণ অপারেশন ছাড়া পাথর গলানো সম্ভব নয়। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন। এখন চলুন পিত্তথলিতে পাথর হলে কি খেতে হবে তা জেনে নেই।

পিত্তথলিতে পাথর হলে কি খেতে হবে

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন পিত্তথলিতে পাথর হলে কি খেতে হবে বা কি খেলে পিত্তথলির পাথর হওয়া থেকে বেঁচে থাকা যাবে। চলুন তাহলে এমন কিছু খাবারের নাম জেনে নেই যেগুলো খেলে পিত্তথলিতে পাথর হবে না। পিত্তথলিতে পাথর হবে না এমন কিছু খাবারের নাম নিচে তুলে ধরা হলো।

  • শসা
  • গাজর
  • নাশপাতি
  • আপেল
  • বিট
  • হলুদ
  • শস্য ও দানা জাতীয় খাবার
  • পুদিনা পাতা
  • ইসবগুলের ভুসি
  • তোকমা দানা
  • ওলট কম্বলের ডালের থকথকে রস
  • তাজা ফল ও সবজি
  • বাদাম
  • মাছ ও সামুদ্রিক খাবার
  • লেগুস
  • জলপাইয়ের তেল ইত্যাদি

মোট কথা হলো- পিত্তথলির পাথর থেকে বাঁচতে আপনাকে শাকসবজি ও ফাইবার যুক্ত খাবার, কাঁচা ফল, উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, কালোজিরার গুঁড়া অথবা তেল জাতীয় খাবার, ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার ইত্যাদি খাবার গুলো খেতে হবে।

অপারেশন ছাড়া পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ ও ঘরোয়া উপায় নিয়ে - লেখকের শেষকথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ, এতক্ষণ আপনাদের সাথে পিত্তথলির পাথর গলানোর ঔষধ ও পিত্তথলির পাথর দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো সহ পিত্তথলির আরো অনেক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখন আপনাদের জন্য বিশেষ একটি সতর্কবার্তা হলোঃ আপনার যদি পিত্তথলির পাথর প্রাথমিক পর্যায়ে হয়ে থাকে তাহলে এই পোস্টটিতে উল্লেখিত ঔষধ গুলো বা ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু ব্যবহার করতে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করবেন। 

আর যদি আপনার পিত্তথলির পাথর প্রাথমিক পর্যায়ের বাইরে চলে যায় তাহলে কিন্তু কোনো অসুবিধেই কাজ হবে না। আপনাকে অবশ্যই অপারেশন করাতে হবে। আর অপারেশনের মাধ্যমে এই পাথর দূর করা সম্ভব। এক্ষেত্রে অপারেশন করার জন্য একজন ভালো চিকিৎসকের দ্বারা করাবেন। আশা করছি পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন। আর যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে পোস্টটি শেয়ার করে অন্যদেরকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ করে দেবেন। সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন।

Share this post with your friends

See previous post See Next Post
No one has commented on this post yet
Click here to comment

Please comment according to Blogger Mamun website policy. Every comment is reviewed.

comment url