ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ ২০ খাবার তালিকা জেনে নিন
বর্তমানে বাংলাদেশসহ আরো বিভিন্ন দেশে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হলো খাবার। যার কারণে চিকিৎসকেরা ডায়াবেটিস রোগীদের বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে নিষেধ করে দেয়। তাই এই পোস্টটিতে আমরা ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকায় কোন খাবারগুলো থাকে,এমন ২০ টি খাবার নিয়ে আলোচনা করবো। যেগুলো একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য জানা খুবই জরুরী।
ডায়াবেটিস কাকে বলে - ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে জানার আগে আমরা আগে জানবো
ডায়াবেটিস আসলে কি বা ডায়াবেটিস কাকে বলে। আমাদের শরীরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা
যদি স্বাভাবিকের চাইতে দীর্ঘ সময় ধরে বেশি থাকে তাহলে যে অবস্থা হয় তাকে
ডায়াবেটিস বলে। ডায়াবেটিস হলো এক ধরনের বিপাক জনিত রোগ যেটি কখনোই সম্পূর্ণ
নিরাময় করা যায় না। সাধারণত আমাদের শরীরে এক ধরনের ইনসুলিন নামক হরমোন থাকে।
যদি কোন সময় সেই ইনসুলিন নামক হরমোনের উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায় তাহলে শরীরে
গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাই। আর এর ফলে বিভিন্ন ধরনের বিপাক জনিত সমস্যা হয়। তার
মধ্যে একটি হলো ডায়াবেটিস। আবার বাংলায় একে বহুমূত্র রোগও বলা হয়।
আরো পড়ুনঃ অর্শ্বরোগে রক্তপাতের কারণ কি
আরো বিস্তারিতভাবে যদি বলি তাহলে- ডায়াবেটিস হলো আমাদের শরীরে পেটের ঠিক উপরে অংশে একটি অগ্ন্যাশয় নামক গ্রন্থি থাকে। আর এই গ্রন্থি থেকেই মূলত আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত ইনসুলিন নামক হরমোন নিষ্কৃত হয়। যখন আমরা চিনি বা শর্করা জাতীয় কোন খাবার খায়। তখন সেই খাদ্য হজম হয়ে তার উপাদান গুলো প্রথমে আমাদের শরীরের রক্তে চলে যায়। আর এই উপাদান গুলো রক্তে চলে যাওয়ার ফলে রক্তের গ্লুকোজ বা চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
ঠিক এই সময় ইনসুলিন নামক হরমোনটি এই চিনি বা গ্লুকোজকে শরীরের বিভিন্ন কোষে
নিয়ে যায় এবং সেই কোষগুলোতে ক্যালরি বা শক্তি উৎপন্ন করে। যদি, কোন কারণে এই
ইনসুলিন নামক হরমোনটি ঠিকমতো নিষ্কৃত না হয় বা ঠিকমতো না কাজ করে তখন আমাদের
শরীরে রক্তে চিনি বা গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত হারে বেড়ে যায় ঠিক তখনই একজন
মানুষ ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়। আর এটিকে ডায়াবেটিস বলা হয়।
এই ডায়াবেটিস সাধারণত দুই প্রকারের হয়ে থাকে। টাইপ 1 এবং টাইপ 2। তবে এই দুটি ডায়াবেটিসের সাধারণ রূপ। তবে ডায়াবেটিস আরো বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, নিওনাটাল ডায়াবেটিস জেসটেসানাল ডায়াবেটিস, প্রিডিয়াটিস ডায়াবেটিস ইত্যাদি। তবে ডায়াবেটিস টাইপ ১ ও টাইপ ২ এই দুটি ধরনের ডায়াবেটিস এর বর্তমানে বেশি দেখা যায়। এক্ষেত্রে যাদের বয়স ত্রিশ বছরের নিচে তাদের ডায়াবেটিস টাইপ ১ বেশি দেখা যায়। এবং যাদের বয়স ৩০ থেকে ৫০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে তাদের মধ্যে সাধারণত ডায়াবেটিস টাইপ ২ বেশি দেখা যায়।
আশা করছি, আপনারা ডায়াবেটিস কাকে বলে ও কত প্রকার তা জানতেও বুঝতে পেরেছেন। এখন
চলুন ডায়াবেটিস কেন হয় এবং ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা জেনে নেই।
ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ কি - ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
ডায়াবেটিস মানবদেহে বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
কারণ হলো খাবার। তাই আমরা ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকায় কোন
খাবারগুলো আছে এমন ২০টি খাবার নিয়ে নিচে আলোচনা করবো। খাবার বাদেও ডায়াবেটিস
হওয়ার আরো অনেক কারণ রয়েছে যেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
আরো পড়ুনঃ পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়
- প্রতিনিয়ত ব্যায়াম না করা।
- সব সময় মানসিক চাপে থাকা। যদিও মানসিক চাপ ডায়াবেটিস বাড়ায় কিনা এ নিয়ে গবেষণা করা হয়নি। তবে অনেক ডাক্তারের মতে অতিরিক্ত মানসিক চাপ ডায়াবেটিস বাড়াতে পারে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমানো।
- রাতে পরিমাণের চাইতে বেশি খাবার সেবন করলে।
- সকালের নাস্তা না খেয়ে কাজে বেরিয়ে গেলে।
- বিকল্প মিষ্টি জাতীয় ফল গ্রহণ করলে।
- চাইনিজ খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করলে।
- অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ করলে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে।
- শুধু বসে বসে কাজ করলে ইত্যাদি।
উপরে উল্লেখিত কারণ গুলোর জন্য তো ডায়াবেটিস হয়ই তবে প্রধানত যে কারণে
ডায়াবেটিস হয় সেটি হলো শরীরে ইনসুলিন, শর্করা, ও গ্লুকোজের ভারসাম্যহীনতার
কারণে। যদি ইনসুলিন নামক হরমোনের মাত্রা কমে যায় বা শর্করা ও গ্লুকোজ এর মাত্রা
বেড়ে যায় তাহলে ডায়াবেটিস হবে। আশা করছি বোঝাতে পেরেছি। এখন চলুন ডায়াবেটিস
লক্ষণ ও ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে জেনে নেই।
ডায়াবেটিস হওয়ার লক্ষণ - ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যেটি সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায় না। তবে পরিমিত খাবার,
শারীরিক শ্রম ও ক্ষেত্রবিশেষে ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রেখে
সুস্থ থাকা যায়। তবে এর জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা তা
শনাক্ত করতে হবে। ডায়াবেটিস শনাক্ত করার জন্য আপনার জানা দরকার ডায়াবেটিস
হওয়ার লক্ষণ গুলো সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে- বর্তমানে দেশে মোট জনসংখ্যার মধ্যে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় এক কোটি ১০ লাখ। এদের মধ্য যারা ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সের মানুষ তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রয়েছে ২৬ লাখ আর যাদের বয়স ৩৫ বছরের বেশি তারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রয়েছে ৮৪ লাখ। আর ডায়াবেটিস খুবই ধীরগতি সম্পূর্ণ একটি ঘাতক। যেটি শরীরে ধীরে ধীরে বাসা বাঁধে। তাই ডায়াবেটিস হওয়ার লক্ষণ গুলো সম্পর্কে জানা জরুরী। চলুন তাহলে ডায়াবেটিস এর লক্ষণগুলো জেনে নেই। যেগুলো দেখে আমরা ডায়াবেটিসনাক্ত করতে পারবো।
- ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ ও প্রস্রাব হওয়া।
- ঘন ঘন পিপাসা লাগা।
- ক্ষুদা বেড়ে যাওয়া।
- শরীর সবসময় দুর্বল লাগা।
- মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া।
- শরীরে চামড়া খসখসে, শুষ্ক হয়ে যাওয়া।
- কোন কারণ ছাড়াই শরীরের ওজন কমে যাওয়া।
- শরীরে চুলকানির ভাব দেখা দেওয়া।
- মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া।
- কেউ কিছু বললে বিরক্ত বোধ করা।
- চোখের সমস্যা তৈরি হওয়া।
- শরীরের সামান্য কেটে গেলে বা ক্ষত হলে সেটি শুকাতে দীর্ঘদিন সময় নেওয়া।
- দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দেখা দেওয়া।
- অল্প কাজ করলেই হাঁপিয়ে যাওয়া।
- যৌ*ন অক্ষমতা দেখা দেওয়া।
- পা জ্বালাপোড়া এবং অবশ অনুভব করা।
- অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি হওয়া।
- পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা এবং বমি বমি ভাব হওয়া।
- বগল ও ঘাড়ের কাছে কালচে দাগ পড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
উপরে উল্লেখিত লক্ষণ গুলো যদি আপনি আপনার মাঝে দেখতে পান তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের
সাথে পরামর্শ নিয়ে চেকআপ করিয়ে নিন। চেকআপ করার পরে যদি ডায়াবেটিস ধরা পড়ে
তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন। এবং কিছু খাবার থেকে বিরত
থাকুন। এখন কোন খাবারগুলো থেকে বিরত থাকবেন, এই নিয়ে আমরা নিচের প্যারাটিতে
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা তুলে ধরেছি। তাই ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ
এমন ২০টি খাবার সম্পর্কে জানতে পড়তে থাকুন।
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ ২০ খাবার তালিকা
যদিও ডায়াবেটিস চিরদিনের জন্য নিরাময় করা যায় না। তবে পরিমিত খাবার, ব্যায়াম
ও বিশেষ কিছু ঔষধ সেবনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়াও কিছু
খাবার পরিত্যাগ করে ডায়াবেটিস থেকে বেঁচে থাকা যায়। তাই ডায়াবেটিস রোগীর জন্য
নিষিদ্ধ এমন ২০ টি খাবার নিয়ে আমরা এই অংশটিতে আলোচনা করবো। চলুন তাহলে
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা দেখে নেই।
কলা এবং তরমুজঃ সকল ধরনের তরতাজা ফলেই ভিটামিন ও ফাইবার থাকে। তবে এই
ফল দুটিতে ভিটামিন ও ফাইবারের পাশাপাশি সুগারও রয়েছে। আর সুগার যেহেতু গ্লুকোজের
পরিমাণ বৃদ্ধি করে দেয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এই খাবার দুটি এড়িয়ে চলতে হবে।
তবে একেবারেই যে এড়িয়ে চলবেন তা কিন্তু নয়। খাবেন যতটুকু দরকার ততটুকুই খাবেন।
অর্থাৎ ডাক্তার যতটুকু খেতে বলবে।
চাইনিজ খাবারঃ চাইনিজ খাবার গুলো স্বভাবতই অনেক টেস্টি হয়ে থাকে।
তবে এই খাবারগুলোর ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ এই খাবারগুলোতে
থাকে প্রচুর পরিমাণে সুগার এবং অন্যান্য উপাদান, যা শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা
বাড়িয়ে দেয়। তাই যারা ডায়াবেটিসের সমস্যা আসেন তারাই খাবারগুলো এড়িয়ে
চলবেন।
আরো পড়ুনঃ পাইলস এর খাবার তালিকা
ফ্রুট স্মুথিঃ নামটি শুনলেই হয়তো আপনার কাছে মনে হবে খাবারটি খুবই স্বাস্থ্যকর। কিন্তু এই খাবারটিতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মারাত্মক। তাই আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে অবশ্যই এই খাবার এড়িয়ে চলুন।
রিফাইন্ড সিরিয়ালঃ রিফান্ড সিরিয়াল নামক খাবারটি শরীরের রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তবে এটি একেকজনের শরীরে একেক ভাবে দেখা দিতে পারে। তাই যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বা ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তাদের এই খাবারটি এড়িয়ে চলাই উচিত হবে।
ফলের রসঃ আমাদের মাঝে অনেকেই সকালের নাস্তার পর ফলের রস সেবন করে।
কারণ এটি স্বাস্থ্যকর বলে। কিন্তু এটি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য হতে পারে হুমকি।
কারণ ফলের রসে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। যার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক
ক্ষতিকর।
পাস্তা আলফ্রেডোঃ পাস্তা আমাদের অনেকেরই প্রিয় খাবার। এটি তৈরি করা হয় মূলত আলফ্রেডো সস ক্রিম, বাটার এবং পারমেসান চিস থেকে। আর এই খাবারটি এক হাজার গ্রাম ক্যালোরি, ১০০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৭৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে। যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর। তাই এই খাবারটি পরিত্যাগ করা জরুরী।
চর্বি সমৃদ্ধ মাংসঃ ডায়াবেটিস হলে শরীরে নানা ধরনের রোগের সমস্যা
দেখা দেয়। তার মধ্যে একটি হলো হার্ট অ্যাটাক। ডায়াবেটিস রোগীরা সাধারণত
হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকে। তাই চর্বি সমৃদ্ধ মাংস স্বাস্থ্যকর খাবার হলেও ডায়াবেটিস
রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদেরকে অবশ্যই রেড মিট এর মত
মাংসগুলো খাওয়া বাদ দিতে হবে।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাইঃ সকল ধরনের ফাস্টফুডিই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য
ক্ষতিকর। আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই যেহেতু এক ধরনের ফাস্টফুড। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের
জন্য এই খাবার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এনার্জি বারঃ এনার্জি বারে প্রচুর পরিমাণে চকলেট, চিনি এবং কার্বন
থাকে। আর এই উপাদানগুলো যেহেতু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। তাই এই খাবারটি
ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিষিদ্ধ।
ট্রেইল মিক্সঃ যে খাবারগুলো সংরক্ষণ করা হয় সেই খাবারগুলোকে মূলত ট্রেইল মিক্স বলা হয়। এই খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে ট্রেইল মিক্সে বাদাম, মিল্ক চকোলেট এবং শুকনো ফল। এই খাবার গুলোর মধ্যে শুধুমাত্র বাদাম বাদে সব ধরনের ট্রেইল মিক্স জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীর জন্য নিষিদ্ধ।
পেস্ট্রিঃ পেস্ট্রি, টোস্ট, ডোনাট ইত্যাদি সব মজার খাবার গুলো মূলত
তৈরি করা হয় প্রক্রিয়াজাত করা সাদা চাল থেকে, যেখানে উচ্চমাত্রায় ফ্যাট,
কার্বন এবং সোডিয়াম থাকে। যার ফলে এই খাওয়ার গুলো একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য
ভয়ানক হতে পারে। তাই এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
আরো পড়ুনঃ দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
ব্লেন্ডেড কফিঃ এক কাপ ব্লেন্ডেড কফিতে রয়েছে ৫০০ ক্যালোরি, ৯ গ্রাম ফ্যাট এবং ৯৮ গ্রাম কার্ব। তাই আপনি যদিও এটি শুধু কফি হিসেবে পান করবেন। কিন্তু এটি পান করার ফলে আপনার শরীরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। যার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য হু*মকি। তাই এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
সাদা চালঃ যারা ডায়াবেটিসের টাইপ ২ এর সমস্যায় আছেন। সেই সকল
রোগীদের জন্য সাদা চালের ভাত অনেক ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ এই চাল
প্রক্রিয়াজাতকরণ করে সাদা করা হয়। আর তাছাড়া এই খাবার শরীরে চিনির মাত্রা
বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই খাবার ঝুঁ*কিপূর্ণ।
চিনিযুক্ত খাবারঃ যে সকল খাবারে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। সেই
খাবারগুলো ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সম্পূর্ণ নি*ষিদ্ধ। কারণ তিনি শরীরের রক্তে
গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে ডায়াবেটিস রোগীর জীবন ঝুঁ*কির মধ্যে
পড়ে যায়। তাই এটি এড়িয়ে চলতে হবে। তবে খাওয়া একেবারে বাদ দেওয়া যাবে না,
পরিমাণ মতো খেতে হবে।
তেলে ভাজা জিনিসঃ ডায়াবেটিস রোগীদের তেলে ভাজা হয় এমন সকল ধরনের
খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। এই খাবারগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই
ক্ষতিকর।
ক্যান্ডিঃ ক্যান্ডিতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। তাই ডায়াবেটিস
রোগীদেরকে অবশ্যই ক্যান্ডি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এটি খেলে ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।
কিসমিসঃ কিসমিস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হলেও ডায়াবেটিস
রোগীদের জন্য এটি ভালো নয়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি
এড়িয়ে চলুন।
ঘন দুধের তৈরি কোন খাবারঃ দুধ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো। তবে ঘন
দুধ এবং দুধ দিয়ে তৈরি এমন কিছু খাবার যাতে দুধের পরিমাণ বেশি থাকে যেমন দই,
দুধের তৈরি ক্রিম, চিজ ইত্যাদি সব খাবার গুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য
নি*ষিদ্ধ ইত্যাদি।
আপনি যদি ডায়াবেটিসের সমস্যায় থাকেন তাহলে অবশ্যই উপরে খাবারগুলো থেকে বিরত
থাকবেন। তবে কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো একবারে বাদ দেওয়া উচিত হবে না। যেমন
শর্করা জাতীয় খাবার, ভিটামিন জাতীয় খাবার ইত্যাদি খাবার গুলো একেবারে বাদ না
দিয়ে পরিমিত খাবেন। আর ডায়াবেটিস হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।
শেষ কথা - ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, এতক্ষন আপনাদের সাথে ডায়াবেটিস কি কাকে বলে, ডায়াবেটিসের
লক্ষণ, ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকায় যে খাবারগুলো থাকে এমন ২০ টি
খাবার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যদিও ডায়াবেটিস চিরদিনের জন্য নিরাময় করা
যায় না। তবে পরিমিত খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম ও বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সেবনের মাধ্যমে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এবং স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করা যায়।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস থেকে বাচাঁর ঘরোয়া উপায়
তাই আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই নিয়মগুলো অনুসরণ
করবেন। আর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলবেন। এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত
হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি অন্যদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে উপকৃত
হওয়ার সুযোগ করে দিবেন। আর এরকম আরো পোস্ট করতে নিয়মিত আমাদের এই ব্লগার মামুন ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
Please comment according to Blogger Mamun website policy. Every comment is reviewed.
comment url