Cryptocurrency: ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় ও এটি কিভাবে কাজ করে জানুন বিস্তারিত
আপনি কি ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে জানতে চান? জানতে চান ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় ও এটি কিভাবে কাজ করে এই সম্পর্কে। তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। কারণ, এই পোস্টটিতে আমরা আলোচনা করবো ক্রিপ্টোকারেন্সি কি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় ও এটি কিভাবে কাজ করে কত প্রকার ও এর সুবিধা ও অসুবিধা কি ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে।
তাই ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় ও এটি কিভাবে কাজ করে এই সম্পর্কে জানতে এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে ফুল ধারণা পাবে। এবং এখান থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।Cryptocurrency/ক্রিপ্টোকারেন্সি কি - ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায়
সহজ ভাষায় যদি বলি তাহলে ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো একটি ডিজিটাল মুদ্রা। বিস্তারিত আপনাদের খুলে বলি। এখানে Crypto/ক্রিপ্টো শব্দটির অর্থ হলো গোপন এবং Currency /কারেন্সি শব্দটির মানে হলো অর্থ বা মুদ্রা। তাহলে ক্রিপ্টোকারেন্সি শব্দটির অর্থ দাঁড়ায় গোপন মুদ্রা বা অর্থ।
তাহলে আমরা বলতে পারি যে ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো একটি সম্পূর্ণ গোপন লেনদেন বা মুদ্রা যার উপরে তৃতীয় কোন পক্ষের বা ব্যক্তির কোন হাত থাকে না। মজার বিষয় হলো ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর দেশের সরকারেরও নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
আরো পড়ুনঃ শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়
ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো একটি ডিজিটাল মুদ্রা বা পেমেন্ট সিস্টেম এটি লেনদেন করার জন্য কোন প্রকার ব্যাংক ট্রানজেকশন ভেরিফাই করতে হয় না। ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি পিয়ার টু পিয়ার সিস্টেম যেটি ব্যবহার করে ইউজাররা যেকোনো সময় যেকোনো কাউকে অর্থ প্রদান করতে পারে।
এটি বিনিময়ের ক্ষেত্রে একজন ইউজারকে ফিজিক্যাল রূপে এই কারেন্সি সঙ্গে রাখতে হয় না শুধুমাত্র একটি মোবাইল ফোন অথবা ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে তারা ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে অর্থ আদান প্রদান করতে পারে। এটি লেনদেন করার জন্য শুধুমাত্র ইউজারকে একটি ডিজিটাল ওয়ালেট তৈরি করতে হয়।
ক্রিপ্টোকারেন্সির মুদ্রা গুলোর মালিকানা জাল হাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য এই মুদ্রার মালিকানা রেকর্ড একটি ডিজিটাল লেজারে সংরক্ষণ করা হয় যা শক্তিশালী ক্রিপ্টোগ্রাফির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। ক্রিপ্টোকারেন্সি পরিচালনা করা হয় একটি বিকেন্দ্রীভূত ব্যবস্থা দ্বারা।
মোটকথা, ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো এক ধরনের বিকেন্দ্রীভূত ডিজিটাল মুদ্রা যার মূল ভিত্তি হলো বর্তমান সময়ে সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্লকচেইন আর ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ক্রিপ্টোগ্রাফির। আশা করছি আপনারা ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। এখন চলুন জেনে নেই ক্রিপ্টোকারেন্সি কত প্রকার এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় এই সম্পর্কে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি কত প্রকার - ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায়
বর্তমান বিশ্বে হাজারেরও বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি রয়েছে। তবে এর মধ্যে বর্তমানে বিনিময় মূল্যে এগিয়ে রয়েছে এবং অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এমন কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সি নিচে তুলে ধরা হলো।
- বিটকয়েন
- ইথেরিয়াম
- টিথার
- বাইনান্স কয়েন
- সোলানা (SOL)
বিটকয়েন
ক্রিপ্টোকারেন্সির মধ্যে যতগুলো কারেন্সি রয়েছে তার মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় কারেন্সি হলো বিটকয়েন। আর এটিই ছিল বিশ্বের প্রথম ক্রিপ্টোকারেন্সি। বিটকয়েনের বিনিময় মূল্য ক্রিপ্টোকারেন্সির অন্যান্য কারেন্সি তুলনায় সবচেয়ে বেশি। Satoshi Nakamoto ২০০৯ সালে বিটকয়েন তৈরি করেন। এর বাজার পুজির পরিমাণ ছিল প্রায় কয়েকশো বিলিয়ন ডলার এর মতো। বিটকয়েন তার নিজস্ব ব্লগচেইনে কাজ করে।
আরো পড়ুনঃ মোবাইল আসক্তির কুফল
ইথেরিয়াম
ইথেরিয়াম যাকে সংক্ষিপ্ত ভাবে ইথার বলা হয়ে থাকে। বিটকয়েন যেমন ক্রিপ্টোকারেন্সির একটি ডিজিটাল মুদ্রা তেমনি ইথেরিয়ামও একটি ডিজিটাল মুদ্রা। যেটি মূলত ইথোরিয়ামের নেটওয়ার্কে স্মার্ট চুক্তি পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ২০১৩ সালে ভিটালিক বুটেরিন ভার্চুয়াল মুদ্রা হিসেবে ইথেরিয়ামকে জনসম্মুখে নিয়ে আসেন। এবং ২০১৬ সালে ইথেরিয়ামকে দুটি পৃথক ব্লকচেইনে ভাগ করা হয় তা হলো ইথেরিয়াম এবং ইথেরিয়াম ক্লাসিক। বিটকয়েনের তুলনায় ইথেরিয়ামে লেনদেন করা সাশ্রয়ী এবং ফার্স্ট।
টিথার
ক্রিপ্টোকারেন্সির মধ্যে টিথার হলো এক ধরনের স্থিতিশীল কয়েন। এটি ডিজাইন করা হয়েছে মূলত কম অস্থির মূল্যে বাহ্যিক সম্পদের সাথে লিঙ্ক করার জন্য। এটি সাধারণত প্রতিটি মুদ্রার সমতুল্য সংখ্যক ইউ এস ডলার দ্বারা সমর্থিত করা হয়। যার ফলে এটি ক্রিপ্টোকারেন্সির অন্যান্য মুদ্রা গুলির মুখোমুখি হতে পারে এবং এটি সব সময় একই ধরনের মূল্যের অস্থিরতার অভিজ্ঞতা থেকে বিরত রাখে। যাইহোক, বর্তমানে এটি আসলেই সম্পূর্ণরূপে ডলার সমর্থিত কিনা তা নিয়ে অনেকের মতভেদ রয়েছে।
বাইনান্স কয়েন
বাইনান্স কয়েন হলো এক ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি মুদ্রা যেটি ক্রিপ্টোকারেন্সির বাইনান্স এক্সচেঞ্জ ট্রেড এবং ফি পরিশোধের জন্য ব্যবহার করা হয়। বাইনান্স এর মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে ১.৪ মিলিয়নেরও বেশি লেনদেন সম্পূর্ণ হয় এই বিশ্বে। বাইনান্স কয়েন ২০১৭ সালে জুলাই মাসে তৈরি করা হয়েছিল যেটি নিজস্ব ব্লকচেইনে কাজ করে। এটি নিজস্ব ব্লকচেইনে কাজ করার আগে ইআরসি ২০ টোকেন এর সাথে ইথেরিয়াম ব্লকচেইন হিসেবে কাজ করতো। বাইনান্স কয়েন এক্সচেঞ্জ এর ক্ষেত্রে যে ফি পরিশোধ করা হয় সেই ফি যারা BNB ব্যবহার করে অর্থ আদান প্রদান করে তাদের ক্ষেত্রে হ্রাস করা হয়।
সোলানা (SOL)
সোলানা হলো ক্রিপ্টোকারেন্সির একটি নেটিভ কয়েন। যেটি ২০১৭ সালে Anatoly Yakovenko নামক ব্যক্তি তৈরি করেছিলেন। এরপর থেকে এটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইথেরিয়াম ও বিটকয়েন যেমন ব্লকচেইনের উপর ভিত্তি করে কাজ করে তেমনি এটিও ব্লকচেইনের উপর ভিত্তি করে ই কাজ করে। সোলানা ক্রিপ্টোকারেন্সি মুদ্রার মূল লক্ষ্যই হলো দক্ষ এবং নিরাপদ উপায়ে লেনদেন পরিচালনা করা। সোলানা সোশ্যাল মিডিয়া, গেমস সহ আরো বিস্তৃত অ্যাপস সমর্থন করে থাকে। সোলানা এর যে নেটওয়ার্ক রয়েছে সেটি দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৫০ হাজার টি লেনদেন করা সম্ভব। যা বিনিয়োগকারীদের কাছে এটি কে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা ১০ মেডিকেল কলেজ
এতক্ষণ আমরা ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রকারভেদ জানলাম। এখন আমরা জানবো ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় ও এটি কিভাবে কাজ করে এই সম্পর্কে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি কিভাবে কাজ করে
আমরা ইতিমধ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সি কি কত প্রকার ইত্যাদি বিষয়গুলো জেনেছি। এই প্যারাটি থেকে আমরা জানবো ক্রিপ্টোকারেন্সি কিভাবে কাজ করে এবং পরের প্যারাটি থেকে জানবো ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় এই সম্পর্কে। চলুন এখন আমরা ক্রিপ্টোকারেন্সি কিভাবে কাজ করে তা জেনে নেই।
প্রত্যেকটি ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরি হয় মাইনিং নামক এক জটিল প্রক্রিয়াযর মাধ্যমে। মাইনিং প্রক্রিয়ায় একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরি হওয়ার পর যে বিষয়টি আসে সেটি হলো বেচাকেনার ও সংরক্ষণের বিষয়টি। প্রত্যেকটি ক্রিপ্টোকারেন্সি মুদ্রা বিভিন্ন ডিজিটাল ওয়ালেটে সংরক্ষণ করা হয়। এই ডিজিটাল ওয়ালেট গুলো আবার দুই ধরনের হয়।
- হট ওয়ালেট
- কোল্ড ওয়ালেট
হট ওয়ালেটঃ এটি ইন্টারনেটের সাথে সরাসরি সংযুক্ত থাকে। যার ফলে এটি থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সি মুদ্রা সহজেই চু*রি এবং জালি*য়াতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটি কম নিরাপদ যুক্ত একটি ওয়ালেট। অপরদিকে,
কোল্ড ওয়ালেটঃ এটি সরাসরি ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকে না। যার ফলে একটি অধিক নিরাপদ একটি ওয়ালেট। কিন্তু এই ওয়ালের থেকে লেনদেন পরিচালনা করা তুলনামূলক কঠিন।
ক্রিপ্টোকারেন্সি কিভাবে কাজ করে এই আলোচনায় আবার ফিরে আসি। সাধারণত একটি
ডিজিটাল ওয়ালেট থেকে অন্য একটি ডিজিটাল ওয়ালেটে ক্রিপ্টোকারেন্সি আদান প্রদান
করা হয়ে থাকে। ক্রিপ্টোকারেন্সির এই লেনদেনের মাধ্যমে আপনারা বিভিন্ন ধরনের
দ্রব্য ও পণ্য সামগ্রিক ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারবেন।
ক্রিপ্টোকারেন্সি কিভাবে কাজ করে এর মূল বিষয় যেটি সেটি হলো ব্লকচেইন।
বিশ্বজুড়ে অসংখ্য কম্পিউটারের সাথে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নেটওয়ার্কই হলো
ব্লকচেইন। আর এই ব্লগচেইন এর উপর ভিত্তি করেই ক্রিপ্টোকারেন্সি তার সমস্ত
কার্যক্রম পরিচালনা করে। আর ব্লক চেইনের মাধ্যমেই ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রত্যেকটি
লেনদেন পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং হাই সিকিউরিটি দেওয়া হয়।
আরো পড়ুনঃ এশিয়ার সবচেয়ে বড় মেডিকেল কলেজ
ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে সংগঠিত সকল ধরনের লেনদেনের সমস্ত ডেটা ব্লগচেইনের
স্টোরে বিকেন্দ্রীভূতভাবে, কারো হস্তক্ষেপ ছাড়াই সংরক্ষণ করা হয়। আশা করছি
আপনারা ক্রিপ্টোকারেন্সি কিভাবে কাজ করে তা বুঝতে পেরেছেন। এখন চলুন এই ডিজিটাল
মুদ্রার সুবিধা ও অসুবিধা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় তা জেনে
নেই।
ক্রিপ্টোকারেন্সির সুবিধা ও অসুবিধা
সকল জিনিসেরই যেমন সুবিধা ও অসুবিধা থাকে তেমনি ক্রিপ্টোকারেন্সিরও কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। নিচে ক্রিপ্টোকারেন্সির সুবিধা ও অসুবিধা তুলে ধরা হলো। এবং পরের প্যারাটিতে ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
ক্রিপ্টোকারেন্সির সুবিধা
ক্রিপ্টোকারেন্সির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো লেনদেন ব্যবস্থায় কঠোর নিরাপত্তা এবং পরিচয় গোপন রাখা। এই সুবিধা দুটির পাশাপাশি আরো অনেক সুবিধা রয়েছে যেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো-
- আমরা যেমন দৈনন্দিন কাজে বিভিন্ন ধরনের টাকার নোট ব্যবহার করি যেমন ১০০০ টাকা, ৫০০ টাকা ইত্যাদি। এই নোটগুলো অনেক সময় জা*ল বা ছেঁড়া হতে পারে। কিন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পূর্ণ একটি ডিজিটাল মুদ্রা যেখানে জা*ল বা ছেঁড়া হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
- খুব দ্রুতগতিতে ক্রিপ্টোকারেন্সি মুদ্রার লেনদেন করা যায়।
- ক্রিপ্টোকারেন্সি এমন একটি মুদ্রা যার কোন কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান নেই তাই এটি লেনদেনে কোন শর্তাবলী বা নির্দেশাবলী থাকে না।
- আপনি যদি বিকাশে অথবা নগদে টাকা ট্রান্সফার করেন তাহলে আপনার থেকে চার্জ কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সি মুদ্রা ট্রান্সফারে কোন ধরনের চার্জ নেওয়া হয় না।
- ক্রিপ্টোকারেন্সি মুদ্রায় সরকারের কোন হস্তক্ষেপ থাকেনা।
- আপনি চাইলেই ক্রিপ্টোকারেন্সির মুদ্রা গুলোকে এটিএম কার্ডের মাধ্যমে টাকা রূপান্তর করতে পারবেন।
- ক্রিপ্টোকারেন্সির মুদ্রার লেনদেন ক্ষেত্রে কোন ধরনের ব্যাংকের প্রয়োজন হয় না।
- ক্রিপ্টোকারেন্সি মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে কোন প্রকার তৃতীয় পক্ষ লাগে না।
- ক্রিপ্টো কারেন্সি মুদ্রা দিয়ে আপনি সকল ধরনের লেনদেন ও পণ্য সামগ্রী ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারবেন।
- ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খুবই ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে যখন তখন ক্রিপ্টোকারেন্সির মুদ্রার মান বেড়ে যেতে পারে ইত্যাদি।
এছাড়াও আরো অনেক সুবিধা রয়েছে যেগুলো আপনি যখন এই ক্রিপ্টোকারেন্সি
ব্যবহার করতে শুরু করবেন তখন নিজেই বুঝতে পারবেন। এখন চলুন এর কিছু অসুবিধা দেখে
নেই। কারণ প্রত্যেকটি জিনিসেরই ভালো এবং মন্দ দিক থাকে। তাই অসুবিধেটাও জেনে রাখা
ভালো।
আরো পড়ুনঃ কোন কোম্পানি চ্যাট জিপিটি তৈরি করেছে
ক্রিপ্টোকারেন্সির অসুবিধা
ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রধান অসুবিধা হলো এটি সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়।
এটি খুবই জটিল একটি বিষয়। এর পুরো ব্যবস্থাটি খুবই জটিল। ক্রিপ্টোকারেন্সির ঝুকি
অনেক বেশি আবার লাভ অনেক বেশি। এছাড়াও আর অন্যান্য অসুবিধা গুলো নিচে তুলে ধরা
হলো। এবং পরের প্যারাটিতে ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় তা
নিয়ে আলোচনা করা হলো-
- ক্রিপ্টোকারেন্সির কোন ফিজিক্যাল অস্তিত্ব থাকে না।
- ক্রিপ্টোকারেন্সিতে আপনি যদি একবার লেনদেন সংগঠিত করেন তাহলে সেটি পুনরুদ্ধার করা অসম্ভব।
- ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার এখনো করা সব দেশেই বৈধ নয়।
- এর ব্যবহার খুবই সীমিত এবং সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়।
- অনেকের কাছে ক্রিপ্টোকারেন্সি অ*বৈধ কার্যকলাপ চালানোর আদর্শ পন্থা হতে পারে।
- ক্রিপ্টোকারেন্সিতে যেহেতু সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকেনা তাই দেশের কর ফাঁকি দেয়া হয় ইত্যাদি।
এই ছিল ক্রিপ্টোকারেন্সির সুবিধা ও অসুবিধা যা এতক্ষণ আমরা আলোচনা করলাম।
এখন চলুন ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় এই সম্পর্কে জেনে
নেই।
ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় জেনে নিন
ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় এই কথাটি শুনে হয়তো অনেকেই ভাবছেন এটি আবার কিভাবে সম্ভব আমি কি ভুল শুনছি? না আপনি ভুল শুনেন নি আপনি ঠিকই শুনেছেন ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। যদিও এতে ঝুঁকি একটু বেশি। তারপরও ঝুঁকি ছাড়া কিন্তু লাভবান হওয়া যায় না। এখন চলুন ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় তার বিভিন্ন উপায় গুলো জেনে নেই।
আমরা ইতিমধ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিভিন্ন মুদ্রার নাম জেনেছি। তারপরও আপনাদের
সুবিধার্থে আবারও আমরা ক্রিপ্টোকারেন্সির আরো কিছু মুদ্রার নাম নিচে তুলে
ধরলাম।
- বিটকয়েন
- ইথেরিয়াম
- টিথার
- বাইনান্স কয়েন
- সোলানা (SOL)
- কার্ডানো
- ডগি কয়েন
- এএমপি
- আইওটা
- এলনগেট
- সেফমুন
- শিবা অনু
- মুনশট
- ভিটিএইচও ইত্যাদি।
এছাড়া আরো হাজারো ক্রিপ্টোকারেন্সি মুদ্রা রয়েছে। এখন চলুন ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় তার উপায় গুলো জানি। ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে আয় করার অনেকগুলো উপায় রয়েছে যেমন-
আরো পড়ুনঃ ChatGPT দিয়ে কি কি কাজ করা যায়?
ট্রেডিং
ক্রিপ্টোকারেন্সি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ক্রয় বিক্রয় করে সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে শুধু আপনার প্রফেশনাল জ্ঞান এবং বাজার পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন পড়বে। কারণ বর্তমানে আর্থিক বাজারগুলো অত্যন্ত প্রয়োজনমূলভূত ও দ্রুত পরিবর্তনশীল। তাই বাজার সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা রেখে আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্মে ট্রেডিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। আর একটা কথা মনে রাখবেন ট্রেডিং কিন্তু একটি স্বল্পমেয়াদি প্ল্যাটফর্ম যেখানে মুদ্রার মান যখন তখন কমবেশি হতে পারে। তাই সবসময় চোখ-কান খোলা রাখবেন।
দীর্ঘমেয়াদিবি নিয়োগ
ক্রিপ্টোকারেন্সিতে আপনি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে আপনি কিছু ক্রিপ্টো সম্পদ ক্রয় করে সেটি ধরে রাখলেন পরে যখন সেই সম্পদটির মূল্য বেড়ে যাবে তখন বিক্রি করে দিলেন। এভাবে আপনি অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে আপনাকে যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে সেটি হলো আপনাকে অবশ্যই স্থিতিশীল সম্পদ শনাক্ত করতে হবে আর যেন সেটি দীর্ঘমেয়াদী হয় এদিকে। যেমন বিটকয়েন এবং ইথেরিয়াম এর মত দীর্ঘমেয়াদি সম্পদ গুলো ক্রয় করে আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগ করতে পারেন।
মাইনিং
মাইনিং বলতে কি বুঝায়? মাইনিং হলো একটি খনন প্রক্রিয়া। আপনি যদি
ক্রিপ্টোকারেন্সিতে একটি খনি তৈরি করেন তাহলে ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্ম
আপনাকে নতুন নতুন কয়েন দিয়ে পুরস্কৃত করবে। আর এই কয়েনগুলোর মাধ্যমে আপনি
প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন হবে
প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং বিশেষ হার্ডওয়ারের অগ্রিম বিনিয়োগ। আর মাইনিং একটি
মাস্টার নোড চলমান প্রক্রিয়া। আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
ব্লকচেইন প্রোজেক্ট পরিচালনা
ক্রিপ্টোকারেন্সি যেহেতু ব্লগচেইন টেকনোলজির উপর ভিত্তি করে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে। সেহেতু আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সির বিভিন্ন ব্লকচেইন প্রজেক্ট পরিচালনার মাধ্যমে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে শুধু আপনার টেকনোলজিক্যাল নলেজ এবং দক্ষতা বেশি থাকতে হবে। এছাড়াও আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সির বিভিন্ন ব্লগচেইন প্রজেক্টের অংশীদার হতে পারবেন।
ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ
কিছু কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বেশি সংখ্যক ক্রিপ্টোকারেন্সি ধারণ করে তাদেরকে লভ্যাংশ প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি এভাবেও অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিং
ক্রিপ্টোকারেন্সির কিছু প্রজেক্ট রয়েছে যেখানে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য
বা পরিষেবা ক্রয় বিক্রয় করতে পারবেন। এছাড়াও সেই পণ্যগুলোর বিজ্ঞাপন দিয়ে
গ্রাহকদেরকে সেই পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট করতে পারবেন। এভাবেও আপনি
ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ চ্যাট জিপিটির সুবিধা
ক্রিপ্টো সোশ্যাল মিডিয়া
ক্রিপ্টোকারেন্সির একাধিক ব্লগচেইন ভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেগুলো আপনাকে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি এবং কিউরেটর করার জন্য পুরস্কৃত করবে। এক্ষেত্রে যে যে দেশ থেকে এগুলো তৈরি করবে তাকে সেই দেশীয় মুদ্রা পুরস্কৃত করা হবে।
এয়ারড্রপ থেকে আয়
ক্রিপ্টোকারেন্সি তাদের প্ল্যাটফর্মের গ্রাহকদের সচেতনা বৃদ্ধির জন্য এয়ারড্রপ এবং
বিনামূল্যে টোকেন প্রদান করে থাকে। ক্রিপ্টোকারেন্সি একটি এক্সচেঞ্জ বা একটি
প্রকল্পের জন্য ব্যবহারকারীদের বড় একটি অংশের জন্য বেস তৈরি করতে এয়ারড্রপস
করতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি যদি এয়ার্ড্রপস এর অংশ নিতে পারেন তাহলে
বিনামূল্যে মুদ্রা পেতে পারেন এবং আপনি সেই মুদ্রা দিয়ে বিনিয়োগ বা ব্যবসা
বা ক্রয় বিক্রয় করতে পারবেন।
অনলাইন জব
আপনি অনলাইন জব করে ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
বর্তমানে ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্মে নতুন নতুন অনেক প্রজেক্ট
নিয়ে কাজ করা হয়। যেখানে আপনি নিজের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে জব করতে পারেন
এবং প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারে।
বাগ হান্টার (Bug Hunter)
বাগ হান্টার হয়ে আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে আয় করতে পারবেন। এটি মূলত ক্রিপ্টোকারেন্সির সিকিউরিটির সাথে সম্পৃক্ত। এখানে মূলত ক্রিপ্টোকারেন্সির বিভিন্ন সিকিউরিটি সম্পর্কিত বাগ খুঁজে বের করে সেখান থেকে সহজেই ক্রিপ্টো আয় করা সম্ভব। বেশিরভাগ ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্ম গুলো তাদের ভুল ত্রুটি সংশোধন করার জন্য বাগ হান্টার প্রোগ্রাম টি চালু করেছে। এখান থেকে আপনি পুরস্কারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ইত্যাদি।
এছাড়াও ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে আয় করার আরো অনেক মাধ্যম রয়েছে। যেখান থেকে আপনি খুব অল্প সময়ে প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে শুধু আপনার দক্ষতা এবং টেকনোলজি সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। কারণ আপনি যদি টেকনোলজি সম্পর্কে না জানেন তাহলে কিন্তু এই প্লাটফর্মে লস খাবেন। আশা করছি আপনারা ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় এই সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন।
আমাদের শেষকথা
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, এতক্ষণ আপনাদের সাথে ক্রিপ্টোকারেন্সি কি, ক্রিপ্টোকারেন্সি কত প্রকার, ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে কিভাবে আয় করা যায় এটি কিভাবে কাজ করে ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আপনারা হয়তো এতক্ষণে ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে বুঝে গেছেন। এক্ষেত্রে আপনাদের উদ্দেশ্যে আমাদের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা হলোঃ
আরো পড়ুনঃ আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্স ব্যবহারের সুবিধা
ক্রিপ্টোকারেন্সি যেহেতু একটি অনলাইন মুদ্রার প্ল্যাটফর্ম সেহেতু এখানে কাজ করার জন্য আপনার অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে টেকনোলজি সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে এবং দক্ষতা তো লাগবেই। কারণ ক্রিপ্টোকারেন্সি খুবই জটিল একটি বিষয় যা সাধারণ মানুষের জন্য বোধগম্য নয়। আশা করছি আপনারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। আর এই পোস্ট যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে অন্যদেরকে পড়ার সুযোগ করে দেবেন। এটা আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ।
Please comment according to Blogger Mamun website policy. Every comment is reviewed.
comment url